bangla-sydney
bangla-sydney.com
News and views of Bangladeshi community in Australia












এই লিংক থেকে SolaimanLipi ডাউনলোড করে নিন



পার্থের চিঠি (১০ম পর্ব)
বোরহান উদ্দিন আহমদ

আগের অংশ পরের অংশ



ইষ্ট ওয়াকওয়ের সাথে প্রথম পরিচয়ঃ

১৪ মে ২০১৫ বৃহস্পতিবার। মিতির সাথে বের হয়ে সকালে আনিসাকে তার চাইল্ড কেয়ারে দিয়ে এলাম আমি সেখানে সাইন করে। বাবলীর পায়ের রেস্ট ডাক্তারের পরামর্শে। ফিরে এসে নাস্তা করলাম। নাস্তা বেশ মজার ছিল। প্রথমে দুধ সিরিয়াল। পরে পান্তা ভাত (রাতের ভাতে পানি দিয়ে), ডিম পোজ আর কাঁচা পেয়াজ। খুব মজা করে খেলাম পান্তা ভাত পহেলা বৈশাখ ছাড়াই।

পরে হাঁটতে বের হলাম একা। আজ নতুন পথে হাঁটলাম। আজ গেট থেকে বের হয়ে প্রথমবারের মত ডান দিকে বহুদূর ক্রস রোড আসবার আগ পর্যন্ত পেনিনসুলা রোড ধরে। পরে পেনিনসুলা রোড ধরে ফিরে বাম দিকে কির্কহাম টেরেস রাস্তা ধরে ২/৩ কিঃমিঃ হাঁটলাম। হেঁটে এই ইষ্ট পার্থে মেল্যান্ডস ইয়ট ক্লাবের কাছে আমাদের সেই সোয়ান নদীর পারে এলাম। সেখানে পৌঁছে প্রথমবারের মত ওয়াকওয়ে দিয়ে বামে মানে পূর্ব দিকে হাঁটলাম। এর পরে এটাকে ইষ্ট ওয়াকওয়ে বলব আমরা। রাস্তার দুই ধারে সেই নলখাগড়ার বনভূমি বা ওয়েটল্যান্ডের বনভূমি। এখানে গাছপালা ওয়েষ্ট ওয়াকওয়ের মত। মূলতঃ নলখাগড়া, সঙ্গে গামট্রি নামের ইউক্যাপিটাস, উইলো গাছ, বটল ব্রাস আর নাম না জানা সব লতা ও গুল্ম এসব। এক জায়গায় দেখলাম কাঁচা রাস্তা পাকা ওয়াকওয়ে থেকে সোয়ান নদীর পারে চলে গেছে।

কংক্রিটের ওয়াকওয়ে ধরে কিছুদূর হাঁটতেই সুন্দর পার্কের মত সবুজ মাঠ দেখতে পেলাম হাতের ডানে সোয়ান নদীর পারে। তবে নদী থেকে একটু দূরে। পার্কের সাথে লাগানো বনভূমির সুন্দর গাছপালা। জায়গাটা খুব সুন্দর। এরপর থেকে হাতের বামে পাহাড়ের উপরে সুন্দর বাড়িঘর যা এই ওয়াক ওয়ের শুরুতেও দেখা যায়। এই বাড়ীর লোকেরা খুব সৌভাগ্যবান। তারা বাড়ীর বারান্দা আর জানালা দিয়ে সুন্দর সোয়ান নদী দেখতে পায়। পরে আরো এগিয়ে একটা গলফ কোর্সের শেষ প্রান্ত হাতের ডানে পড়ল। খুব সুন্দর সবুজ সেই গলফ কোর্স। পরে জেনেছি এই গলফ কোর্সের নাম মেল্যান্ডস পেনিনসুলা গলফ কোর্স। সেখান থেকে ফিরলাম সোয়ান নদীর ধারে মেল্যান্ডস ইয়ট ক্লাব পর্যন্ত। খুব ভাল লাগল এই ইষ্ট ওয়াকওয়ে। তবে এই ওয়াকওয়ের দুইপাশের বনভূমি ওয়েষ্ট ওয়াকওয়ের দুইপাশের বনভূমির চেয়ে কিছুটা কম গভীর। মাঝে মাঝে ওয়াকওয়ের পাশে সাইন বোর্ডে ওয়েটল্যান্ডে সাপের উপস্থিত সম্পর্কে সতর্কবাণী (Snakes have been sighted and are active in this locality)শিহরন জাগায় বৈকি।

ইয়ট ক্লাবে পৌঁছে তরুণ শিখ রবি সিং জীর সাথে পরিচয় ও হৃদ্যতাপূর্ন আলাপ হল। অত্যন্ত ভদ্র ও সদালাপী এই যুবক। তার সাথে আলাপ করে খুব ভাল লাগল। আবার হেঁটে গেলাম হিলটপ পার্কে। নীচে মজাদার ঢাল বেয়ে নামলাম নতুন পথে। পরে ওয়েষ্ট ওয়াকওয়ে দিয়ে ডান দিকে বা পশ্চিম দিকে অল্প কিছুদূর হাঁটলাম। বাসায় ফিরে বাবলীকে রান্নাবান্নায় সাহায্য করলাম বাসন পেয়ালা ধুয়ে, সবজী কাটাকুটি করে আর ভাতের চাল ধুয়ে। পরে মাঝে মাঝে এভাবে তাকে সাহায্য করেছি। মেয়েকে হাসপাতালে কাজে গেছে। ফিরবে সন্ধ্যায়। তার কিছুটা সাহায্যের জন্য বাবলী ও আমার মাঝে মাঝে এই কার্যক্রম। দুপুরের আগে পার্থের চিঠি ১ম পর্ব লেখা শুরু করলাম ল্যাপটপ কম্পিউটারে। লাঞ্চে ভাতের সাথে স্নাপার মাছ খেলাম। দেখলাম এই মাছ একটু শক্ত। এটাই এই মাছের বৈশিষ্ট্য মনে হল। পার্থের চিঠি রাতে শেষ করলাম। গভীর রাতে। রাত বারোটায় পাঠালাম বন্ধুদের বন্ধন ফোরামে। সঙ্গে সঙ্গে বন্ধু রেজার প্রশংসা-বানী ও উৎসাহব্যঞ্জক সাড়া পেলাম। ধন্যবাদ রেজা।


নাতনী আনিসার চুল কাটানোর সংগ্রামঃ

পরদিন ১৫ মে, শুক্রবার। পার্থে আমার ২য় জুম্মা। আজ তানভীরের সাপ্তাহিক ছুটির প্রথম দিন। মিতিকে তানভীর গাড়ীতে করে হাসপাতালে পৌঁছাতে গেল। আনিসার জ্বর ছিল ভোরে। তাই আনিসা আজ তার চাইল্ড কেয়ারে যাবে না। জুম্মার নামাজের আগে তানভীর আমার মোবাইলের চার্জারের এডাপ্টার নিয়ে এলো। নতুন অস্ট্রেলিয়ান SIM নিয়ে এলো। বহুদিন পর চার্জার লাগিয়ে মোবাইলকে চার্জ করতে দিলাম। পরে নতুন অস্ট্রেলিয়ান SIM লাগানো হল। তানভীরের বদৌলতে আমার মোবাইল চালু হল। তানভীরকে অনেক ধন্যবাদ।

জুম্মার নামাজ পড়তে গেলাম বেলা ১টা ৪০মিনিটে তানভীরের সাথে তানভীরের গাড়ীতে করে। জামাত খাড়া হল ২টা ২০মিনিটে। আজও জামাতের আগে কাবলুল জুমা সুন্নত নামাজ পড়বার সময় দিল না। বুঝলাম এরা এখানে এই সময় কখনও দিবে না। এর পর থেকে ঐ সুন্নত নামাজ বাসায় পড়ে আসব। জামাতে ফরজ নামাজের পর অধিকাংশ মুসল্লি দ্রুত চলে গেল। আজ জামাতের পরে আমার সুন্নত নামাজের শেষে জনৈক পাকিস্তানী (বাড়ী লাহোরে) তরুণের সাথে আলাপ হল। আজও নামাজ শেষে মসজিদে ডোনেশনের বক্সে কিছু দিলাম গত সপ্তাহের মত। ইমাম সাহেব ডোনেশনের জন্য মুসল্লিদের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন জামাতের আগে। জানিয়েছিলেন এই মসজিদের জন্য মাসে খরচ ৪০০০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার, মানে প্রতি সপ্তাহে ১০০০ডলার।

সন্ধ্যার আগে আনিসাকে নিয়ে আমি আর বাবলী বের হলাম। আনিসাকে তার প্র্যামে নিয়ে ঘুরলাম। সন্ধ্যার কিছু আগে বের হলাম। উদ্দেশ্য আনিসার চুল কাটানো আর কিছু মার্কেটিং। মরলিতে(Morley) কনভেন্ট্রি ভিলেজ (Coventry Village) সুপারমার্কেটে গেলাম। আনিসার চায়নিজ সেলুন বন্ধ পাওয়া গেল। পাঁচটা/সাড়ে পাঁচটায় বন্ধ হয়ে গেছে, আজ উইকএন্ড শুরু হবে বলে। কাজেই আনিসার চুল কাটানো হল না আজ। ফলে পাশের বিশাল চায়নিজ ডিপার্টমেন্টাল শপ এমসিকিউ(MCQ)'এ রুটি ও অন্যান্য দরকারি খাবার জিনিষপত্র কেনা হল। বিশাল এই ডিপার্টমেন্টাল শপে শাকসবজি, ফলমূল, মাছ মাংস, টয়লেট্রীজসহ কি না পাওয়া যায়?

পরদিন ১৬ মে, শনিবার। ছুটির দিন। সকাল থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। মাঝে মাঝে মাঝারি বৃষ্টি। নাস্তার পরে আমরা সবাই বের হলাম। আনিসাকে নিয়ে। আনিসার চুল কাটাতে। ছাতা মাথায় গাড়ী থেকে নামলাম। আমরা গেলাম কনভেন্ট্রি ভিলেজে। সেখানে চায়নিজ সেলুন Kwikkut (কুইক কাট)'এ গেলাম। এটার বৈশিষ্ট্য দেখলাম সেলুনের বারবার বা ক্ষৌরকার দুজনই মহিলা। এক বৃদ্ধা বারবার আনিসার চুল কাটবে। অত্যন্ত মমতাময়ী এই চায়নিজ মহিলা বারবার। আনিসার আপত্তি কমানোর জন্য প্রথমে বারবারের চেয়ারে তার বাবা তানভীর বসল তাকে কোলে নিয়ে বারবারের কাপড় তার কাঁধে জড়িয়ে। পরে আনিসার আপত্তির মুখে তাকে বারবারের ছোট একটা হলুদ কাপড় পরানো হল। এরপর আসল সংগ্রাম শুরু হল। চুল কাটানো শুরু করবার চেষ্টা করতেই আনিসা কান্না শুরু করল। আনিসা কেবল কান্না করল আর মাথা নাড়ল। এর মাঝেই সেই মিষ্টি বৃদ্ধা আনিসার মাথা নাড়ানোর ফাঁকে ফাঁকে চুল কাটলেন কাঁচি দিয়ে। বারবার মহিলা গুড বেবি সুইট বেবি ইত্যাদি বলে চলছেন আর কাঁচি চালাচ্ছেন। মহিলা অত্যন্ত দক্ষ। কোন রকমে কষ্ট করে চুল কাটানো হল। তবে বেশ ভালই কাটানো হল। পরে চায়নিজ নানীর কোলে এক চায়নিজ শিশু বসল চুল কাটানোর জন্য। সেই একই চিত্র, সেই একই রকম কান্না। জানিনা বাচ্চারা চুল কাটাবার সময় এত কান্না কেন করে। (চলবে)



আগের অংশ পরের অংশ



বোরহান উদ্দিন আহমদ, পার্থ থেকে




Share on Facebook               Home Page             Published on: 27-Nov-2015

Coming Events:



A day full of activities, games and fun.







Lakemba Blacktown Mascot
Minto Money raised so far





Lakemba Blacktown Mascot
Minto Money raised so far



Blacktown Lakemba Mascot
Minto Money raised so far







Blacktown Lakemba Mascot
Minto Money raised so far