bangla-sydney
bangla-sydney.com
News and views of Bangladeshi community in Australia












সুন্দর ফন্টের জন্য SolaimanLipi ডাউনলোড করে নিন...

সমুদ্রে সাফল্য, নদীতে ব্যর্থতা


পত্রিকা-সূত্রে প্রকাশ যে, বঙ্গোপসাগরে সামুদ্রিক সীমানা নিয়ে ভারতের সাথে বিরোধ নিষ্পত্তিতে বাংলাদেশ বিজয় অর্জন করেছে। যে প্রায় পঁচিশ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে বিরোধ ছিল, তার প্রায় উনিশ হাজার বর্গ কিলোমিটার বাংলাদেশের বলে স্বীকৃত হয়েছে। সৈকত সীমানা বিন্দু থেকে ভারত প্রস্তাবিত ১৬০ ডিগ্রী বরাবর রেখার পরিবর্তে বাংলাদেশের দাবী অনুযায়ী ১৮০ ডিগ্রী বরাবর, তথা সোজা দক্ষিণে সীমান্ত রেখা টানার সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলে বাংলাদেশের এই বিজয় অর্জন সম্ভব হলো।

ভারতের সাথে সামুদ্রিক সীমা সংক্রান্ত বিরোধ প্রায় তিন দশক ধরে দ্বিপাক্ষিক কাঠামোয় নিষ্পত্তি না হওয়ার কারণে বাংলাদেশ ২০০৯ সনের ৮ই অক্টোবর নেদারল্যান্ডের হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক স্থায়ী সালিশি আদালতের শরণাপন্ন হয়। ২০১৩ সনের ডিসেম্বরের ৯ থেকে ১৮ তারিখে এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। অবশেষে আদালত গতকাল ভারত এবং বাংলাদেশের নিকট তার রায় পৌঁছে দেয়। ভারত এই রায় স্বীকার করে নিয়েছে।

এর আগে ২০১২ সনের ১৪ই মার্চ সামুদ্রিক সীমানা সংক্রান্ত মিয়ানমারের সাথে বিরোধ নিষ্পত্তিতেও জার্মানির হামবুর্গ-ভিত্তিক সমুদ্র আইন-বিষয়ক আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে (ইটলস) বাংলাদেশ বিজয় অর্জন করে।

সামুদ্রিক সীমানা নিয়ে ভারতের সাথে বিরোধ সংক্রান্ত বাংলাদেশের এ বিজয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) আনন্দিত। এ বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য আন্তর্জাতিক আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য এবং আন্তর্জাতিক আদালতে এই মামলা পরিচালনা ও শুনানিতে সফলভাবে অংশগ্রহণের জন্য বেন সরকার এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানাচ্ছে। বেন আশা করে যে, এই রায়ের ফলে বঙ্গোপসাগরের যে বিরাট অংশে বাংলাদেশের অধিকার স্বীকৃত হলো, তার সম্পদরাজি দেশের জনগণের স্বার্থে সঠিকভাবে ব্যবহৃত হবে এবং বিদেশী কোম্পানি দ্বারা লুণ্ঠিত হবে না।

সমুদ্র সীমা নিয়ে ভারতের সাথে বিরোধে বাংলাদেশের এই বিজয় একই সাথে দেশের নদ-নদী রক্ষায় ভারতের নিকট বাংলাদেশের বিশাল পরাজয়ের কথা মনে করিয়ে দেয়। আজ বহু দশক ধরে দ্বিপাক্ষিক কাঠামোর আওতায় বাংলাদেশ ভারতের সাথে নদ-নদী বিষয়ক বিরোধের নিষ্পত্তির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই চেষ্টা যে নিদারুণভাবে ব্যর্থ হয়েছে তা আজ বলার অপেক্ষা রাখে না। ফারাক্কার কারণে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদ-নদীসমূহ আজ বহুলাংশে মৃত কিংবা মৃতপ্রায়। ভারতের গজালডোবা বাঁধের কারণে তিস্তা নদী আজ কার্যত পানিশূন্য। অভিন্ন ৫৪টি নদ-নদীর প্রায় সবক’টির উপরই ভারত পানি অপসারণমূলক কাঠামো নির্মাণ করেছে কিংবা করার পরিকল্পনা করছে। আন্ত-নদী সংযোগ প্রকল্পের অধীনে ভারত ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার পানি পশ্চিম ও দক্ষিণ ভারতে অপসারণের প্রকল্প বাস্তবায়িত করছে। ফলে এখনও যেটুকু পানি বাংলাদেশের নদ-নদীতে অবশিষ্ট আছে আগামীতে সেটুকুও হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।

এমতাবস্থায় শুধুমাত্র দ্বিপাক্ষিক কাঠামোয় সীমাবদ্ধ না থেকে আন্তর্জাতিক ফোরামের শরণাপন্ন হওয়ার সময় এসেছে। সম্প্রতি পর্যাপ্ত সংখ্যক দেশ কর্তৃক অনুমোদনের ফলে আন্তর্জাতিক নদ-নদীর ব্যবহার সংক্রান্ত জাতিসংঘের ১৯৯৭ সনের কনভেনশন কার্যকারিতা পেয়েছে। পরিতাপের বিষয় যে, বাংলাদেশ এখনও এই কনভেনশন অনুমোদন করেনি। বাংলাদেশের উচিত অবিলম্বে এই কনভেনশন অনুমোদন করা, এবং ভারত, নেপালসহ উপমহাদেশের অন্যান্য দেশকেও তা অনুমোদনে উদ্বুদ্ধ করা।

এটা ঠিক যে, বাংলাদেশ নিজে ১৯৯৭ সনের কনভেনশন অনুমোদন করলেই নদ-নদীর বিরোধ নিয়ে ভারতকে আন্তর্জাতিক আদালতে নিয়ে যেতে পারবে না। ভারত নিজে এই কনভেনশন অনুমোদন না করলে এবং নদ-নদী সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তিতে আন্তর্জাতিক আদালতের এখতিয়ার স্বীকার না করলে এককভাবে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক আদালতের শুনানি ও রায় পাবে না।

কিন্তু ভবিষ্যৎ এই অনিশ্চয়তা নির্বিশেষে বাংলাদেশকে অবিলম্বে দ্বিপাক্ষিক কাঠামো-ভিত্তিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ধারার প্রচেষ্টা শুরু করা প্রয়োজন। সূচনাতেই যে এই ধারার প্রচেষ্টা ফলবতী হবে এমনটা আশা করার প্রয়োজন নেই। প্রথম পর্যায়ে হয়তো ফলাফল শুধু প্রচার-ধর্মী হবে। কিন্তু তাতেও লাভ কম নয়, কেননা নদ-নদী বিষয়ে বাংলাদেশের সাথে ভারতের চূড়ান্ত রকম অবিচারমূলক আচরণ সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বর্তমানে মোটেও অবগত নয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মতামতের একটি বিশেষ মূল্য আছে; ভারতের পক্ষে সে মতামত সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা সম্ভব হবে না। এই মতামত জোরালো করতে পারলে নদ-নদী বিষয়ে আন্তর্জাতিক আদালতের এখতিয়ার সম্পর্কে ভারতের মনোভাবও যে পরিবর্তিত হবে না, তা হলফ করে বলা যায় না।

সুতরাং, নদ-নদী বিষয়ে ভারতের সাথে বিরোধের ন্যায্য নিষ্পত্তির লক্ষে দ্বিপাক্ষিক কাঠামোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ফোরাম ভিত্তিক প্রয়াস অবিলম্বে শুরু করা প্রয়োজন, কেননা শুধুমাত্র দ্বিপাক্ষিক কাঠামো বাংলাদেশের জন্য কেবল বঞ্চনাই ডেকে আনছে।


(For more details, please check http://ben-global.org/NewsletterArchives.html)





Share on Facebook               Home Page             Published on: 21-Jul-2014

Coming Events:



A day full of activities, games and fun.







Lakemba Blacktown Mascot
Minto Money raised so far





Lakemba Blacktown Mascot
Minto Money raised so far



Blacktown Lakemba Mascot
Minto Money raised so far







Blacktown Lakemba Mascot
Minto Money raised so far