bangla-sydney
bangla-sydney.com
News and views of Bangladeshi community in Australia













তলস্তয়ের দেশে বলশেভিক বিপ্লব (৩)
বদরুল আলম খান


আগের অংশ পরের অংশ


মিকলুকো মাকলায়া স্ট্রীট। মস্কোর দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চল। সেখানেই মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়। গোটা এলাকা জুড়ে ৮টি হোস্টেল। প্রতিটি পাঁচ তালা করে। ৩ নং হোস্টেলের চার তালা নিয়ে তৈরি হয়েছে সাময়িক কোয়ারেনটাইন। এয়ারপোর্ট থেকে সোজা এসে পৌঁছলাম সেখানে। এখানে থাকতে হবে এক সপ্তাহ। নানা ধরনের মেডিকেল চেক আপ হবে। তারপর পাওয়া যাবে বাইরে যাওয়ার অনুমতি। সন্ধ্যা হয়ে এলো। দিনের কাজ শেষ করে সবাই যার যার গৃহে ফিরে গেছে। চারিদিক নিশ্চুপ। মস্কোতে আমার প্রথম রাত। চোখে ঘুম নেই। কাচের জানালা দিয়ে তাকিয়ে আছি। দেখি টকটকে লাল তারা জ্বলছে ক্রেমলিন টাওয়ারে। পাশে বাঙ্গালী কে একজন বলল “ওটা জানো কি? ওটা হচ্ছে কেজিবির কেন্দ্রীয় ভবন”। সেখান থেকে জ্বলছে ঐ আলো। ঐ আলো এমনি সেমনি আলো নয়। গোয়েন্দা কাজে লাগে”। মস্কোর ক্রেমলিন সম্পর্কে আমার জ্ঞান সীমিত। অগত্যা তার দাবিকে স্বীকার করে নিতে হলো। সেটি যে ভ্রান্ত তা কেবল উদ্ধার হল এক সপ্তাহ পর। ঐ তারার ধারনাটি কিন্তু বহুদিন ধরে আমার কল্পনায় টিকে ছিল। পরে জেনেছি সেটি ছিল ক্রেমলিনের স্পাস্কায়া টাওয়ার যার মাথায় রয়েছে রুবি পাথরের জ্বলজ্বল করা ঐ তারাটি। ১৯৩৭ সালে তারাটি বসান হয়েছিল টাওয়ারের ওপর।

দেখতে দেখতে কেটে গেলো এক সপ্তাহ। নানা ধরনের মেডিকেল চেকআপ হলো। সাদা পোশাকে সোভিয়েত ডাক্তার এবং নার্স নানান সব পরীক্ষা করলো। দেখল শরীর স্বাস্থ্য ঠিক আছে কিনা। অবশেষে কোয়ারেন্টিনের বাধাধরা জীবন থেকে মুক্তি পেলাম। দেখি হোস্টেলের সামনে দাঁড়িয়ে আছে পাকিস্তান থেকে পড়তে আসা কয়েকজন ছেলে-মেয়ে। তারা এসেছে আমাদের অভ্যর্থনা জানাতে। তাদের নেতা শাহীদ ভাই। ভারত থেকে এসেছে দুই মেয়ে - সুনিতা এবং রোশনি। দু'জনের বাড়ি ভারতের উজ্জয়ন শহরে। তাদের বাবা সেখানকার উঁচু দরের রাজনৈতিক নেতা। উজ্জয়ন দিল্লি থেকে বেশি দূরে নয়। ২০১২ সালে সেখানে গিয়েছিলাম বেড়াতে। আমার বন্ধু বদরুল হাসান বাবলু ও তার স্ত্রী উমার সাথে দেখা করতে। তারা বললো রোশনি মারা গেছে বেশ কিছু দিন হলো। দুঃখে বুক ফেটে গেল। মস্কোতে যখন আমি অসহায় তখন তার কৃপায় সিক্ত হয়েছি। আমাকে রান্না করে খাইয়েছে বহুবার। প্রবাস জীবনের প্রাথমিক অসহায়ত্বকে অতিক্রম করার মানসিক শক্তি জুগিয়েছে। অথচ আজ সে নেই। যাই হোক, হোস্টেল থেকে বের হতেই শাহীদ ভাই বললেন– “চলো আজ মস্কো শহর দেখবো। সেখানে ক্রেমলিন, লেনিনের মোসোলিয়াম। আছে আরও কতো কিছু দেখার। মিকলুখো মাকলায়া মেট্রো স্টেশন থেকে ট্রেনে চেপে প্রসপেক্ট ভিরনাদস্কি, লেনিন পাহাড়, ফ্রুঞ্জে, পার্ক কুলতুরি স্টেশন পার হয়ে অবশেষে পৌঁছলাম সেন্ট্রাল স্টেশনে। ট্রেনের ভাড়া মাত্র ৫ কোপেক। মেট্রো রেলের সেবা দেখে তো আমি অবাক। প্রতিটি স্টেশন যেন এক একটি শিল্পকর্ম। ফ্রেস্কোতে ভরা। ভাবলাম এই না হলে সমাজতন্ত্র। বুক দুরু দুরু করছে। অবশেষে ক্রেমলিন দেখবো, দেখবো অক্টোবর বিপ্লবের নেতা লেনিনের মৃতদেহ। দেখবো সোভিয়েত ক্ষমতার কেন্দ্রকে।

স্টেশন থেকে বেশ কিছুটা হাটা পথ। পথটি একটু পাহাড়ি। হঠাৎ চোখের সামনে ভেসে উঠলো কল্পনার সেই রেড স্কয়ার। যার ছবি দেখেছি কতবার কতভাবে। ছোট ছোট লাল ইট দিয়ে মোড়ানো প্রশস্ত খোলা মেলা জায়গা। সামনে ক্রেমলিনে ঢোকার বিশাল গেট। মাঝে মধ্যে দেখি কালো রঙের লিমোজিন দ্রুত গতিতে ক্রেমলিনের ভেতর ঢুকছে। আবার বের হচ্ছে। ক্রেমলিনের উঁচু প্রাচীরটির পাশে রয়েছে সবুজ গাছের মেলা। দেওয়ালের ধার ঘেঁষে সোভিয়েত কম্যুনিস্ট পার্টির নেতাদের কবর। সুসলভ স্তালিন ডেরজিন্সকি কালিনিনসহ আরও অনেকের। আরো আছে ইউরি গ্যাগারিন জেনারেল জুকভ আমেরিকান সাংবাদিক জন রিড যিনি বিখ্যাত হয়েছিলেন অক্টোবর বিপ্লবের ওপর “টেন ডেজ দ্যাট সুক দ্য ওয়ার্ল্ড” বইটি লিখে। ক্রেমলিনের দেওয়ালের ঠিক মাঝখানে আশ্রয় নিয়ে আছে লেনিনের মোসোলিয়াম। গাড় লাল মারবেল পাথর দিয়ে তৈরি তার চার দেয়াল। গেটের সামনে বন্দুকধারী দুই প্রহরী। দাড়িয়ে আছে পাথরের মূর্তির মতো। বোঝার উপায় নেই তারা জীবন্ত মানুষ। প্রতি ঘণ্টা অন্তর বদল হচ্ছে প্রহরী। দেখার মতো এক দৃশ্য বটে। সব কিছু দেখছি আর অভিভূত হচ্ছি। মনের মধ্যে সুকান্ত ভট্টাচার্যের সেই কবিতার লাইন। “বিপ্লব স্পন্দিত বুকে মনে হয় আমিই লেনিন”। মোসোলিয়ামের সামনে মানুষের লাইন। সেই লাইনে আমাদেরও দাঁড়াতে হলো। এবার এলো ঢোকার পালা। ঢুকেই দেখি শায়িত অবস্থায় আছে একটি দেহ। মুখমণ্ডল ঠিক ঠিক মিলে যায় লেনিনের সাথে। পরিধানে কালো সুট। দেহটিকে ঘিরে রয়েছে শক্তিশালী আলোর ফোয়ারা। তাতে করে দেহটি দেখায় অনেক বেশি উজ্জ্বল। লেনিনের দেহের বাম পাশ দিয়ে অতি ধীরে হেটে যাওয়ার নির্দেশ পেলাম। লেনিনের মাথার কাছে এসে ভাবলাম আর একবার ভালো করে দেখে নেই। কিন্তু দণ্ডায়মান কর্মকর্তার কণ্ঠ থেকে এলো দ্রুত স্থান ত্যাগের নির্দেশ।

অনেকে বলেন রুশ বিপ্লব কোন বিপ্লব ছিল না। ছিল একটি অভ্যুত্থান মাত্র। তাদের ভাষায় লেনিন ষড়যন্ত্র করে রাশিয়ার ক্ষমতা দখল করে নিয়েছিল। এ সব অভিযোগ কিন্তু আমি কখনও সঠিক বলে মনে করিনি। বিপ্লব হঠাৎ করে কোথাও ঘটে না। তাকে প্রস্তুত করতে হয়। বিপ্লবের সব পূর্বশর্তগুলি রাশিয়ায় ধীরে ধীরে গড়ে উঠেছিল বেশ আগে থেকে। আগে বলতে বেশ পেছনে যেতে পারি। ১৭৭৩ সালের কথা। পুগাচভ নামে একজন আর্মি লেফটেন্যান্ট কৃষকদের অধিকার নিয়ে জারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল। সেই বিদ্রোহ ব্যর্থ হলেও রাশিয়ার জনগণের মনে পুগাচভ সম্মান পেয়েছিল বীর হিসেবে। জারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ আরও হয়েছে। তার মধ্যে ১৮২৫ সালের সেনাবাহিনীর বিদ্রোহ অন্যতম। ঐ বছর ডিসেম্বর মাসে বেশ কিছু অফিসার জারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল। ইতিহাসে একে ডিসেমব্রিস্তদের আন্দোলন বলা হয়। সে বিদ্রোহও ব্যর্থ হয়েছিল। বেশ কয়েকজন অফিসারকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলেও জারের বিরুদ্ধে আন্দোলন থেমে থাকে নি। তবে সব বিদ্রোহের মধ্যে ১৯০৫ সালে যা ঘটেছিল সেটি ছিল সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ। লেনিন তাকে বলেছিলেন ১৯১৭ সালের বলসেভিক বিপ্লবের ড্রেস রিহারসেল। ১৯০৫ সালে শ্রমিকেরা জারের প্রাসাদের দিকে মিছিল করে যাচ্ছিল রুটির দাবী নিয়ে। রুশ -জাপান যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার অর্থনীতি ভালো যাচ্ছিল না। নানা কারণে মানুষ কাটাচ্ছিল দুর্বিষহ জীবন। কৃষক শ্রেণীর জীবনও ছিল নানাভাবে নিগৃহীত এবং দারিদ্রে ভরা। হঠাৎ সেই শান্তিপূর্ণ মিছিলে সেনাবাহিনী গুলি বর্ষণ করলো। বহু শ্রমিকের মৃত্যু হলো। ১৯০৫ সালের ঐ ঘটনার পর রাশিয়ার জার বাধ্য হয়ে হাতে নিল কিছু সংস্কার কাজ। কিন্তু সেগুলি যথেষ্ট ছিল না। অসন্তোষের মুল কারণগুলি ঠিকই থেকে গেল রাশিয়ায়।

প্রথম মহাযুদ্ধ যখন শুরু হল ঐ অসন্তোষ তখন ভিন্ন রূপ নিয়েছে। জার যুদ্ধ চালিয়ে যেতে ইচ্ছুক। সাধারণ জনগণ যুদ্ধের বিপক্ষে। যুদ্ধের কারণে লোকালয় ধ্বংস হচ্ছে। শস্যের ক্ষেত আগুনে পুড়ে কৃষি উপযোগিতা হারাচ্ছে। মানুষ না খেয়ে মরছে। কৃষিতে বৈষম্য প্রকট হয়ে উঠছে নানা কারণে। জমির ওপর কৃষকের কোন অধিকার নেই। রাজতন্ত্রের আশ পাশ ঘিরে যে শক্তিশালী অভিজাত শ্রেণী গড়ে উঠেছে তাদের হাতে রয়েছে অধিকাংশ উর্বর জমির মালিকানা। শ্রমিক শ্রেণী সংখ্যায় যে খুব বড় তা নয়। কিন্তু সেন্ট পিটারসবার্গ এবং মস্কোর মতো বড় শহরগুলিতে তাদের লক্ষণীয় উপস্থিতি এড়িয়ে যাওয়া কঠিন। তারাও যুদ্ধের বিরুদ্ধে। বিরুদ্ধে রাজতন্ত্রের। সেনাবাহিনীর জোয়ানেরা যুদ্ধে ক্লান্ত। তারাও ঘরে ফিরতে চায়। অথচ যুদ্ধ শেষ করার কোন তাগিদ জার অনুভব করেনি। পরিবেশটি এমন হয়ে উঠেছিল যে বিপ্লব বা বিক্ষোভ বা প্রতিবাদ বেশ অবশ্যম্ভাবী বলেই মনে হচ্ছিল। ঘটলো ঠিক তাই। জার বেরিয়েছিলেন ট্রেন ভ্রমণে। তার ট্রেনকে গন্তব্য স্থানে না পাঠিয়ে রেল শ্রমিকেরা ট্রেনটিকে পাঠাল অন্য পথে। ট্রেন এসে পৌঁছল এমন এক প্রত্যন্ত জায়গায় যেখান থেকে ফেরার পথ নেই। ক্ষমতা থেকে জার অপসারিত হলো। ক্ষমতায় এলো অন্তর্বর্তীকালীন এক সরকার। সেই সরকার গঠিত হয়েছিল রাশিয়ার ডুমা বা পার্লামেন্টের সদস্যদের নিয়ে। পাঁচমিশালি সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি নিয়ে গড়া ঐ সরকারের প্রধান হলেন কেরেন্সকি। কাজান শহরের যে স্কুলে লেনিন পড়তেন কেরেন্সকির বাবা ছিলেন সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। লেনিনের মতাদর্শে বিশ্বাসী কেউ ঐ সরকারে ছিল না। কিন্তু লেনিন ঐ সরকারের দুর্বলতা ভালো ভাবেই বুঝেছিলেন এবং সেটি উন্মোচিত করেছিলেন অত্যন্ত নিপুণ হাতে।

“এপ্রিল থিসিস” নামে লেনিন যে লেখাটি লিখেছিলেন সেটি বিপ্লবের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সেখানেই তিনি বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। থিসিসটি আমি পড়েছি মস্কোতে ছাত্র থাকা অবস্থায়। সেখানে ১০টি নির্দেশনামা ছিল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তিনি বুর্জোয়া সরকার হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন। উপদেশ দিয়েছিলেন তার সাথে সব ধরনের সম্পর্ক থেকে দূরে থাকার। লেনিনের মুল কথা ছিলো প্রথম মহাযুদ্ধ বন্ধ করতে হবে যে কোন মূল্যে। জমি কৃষকদের হাতে বিতরণের ব্যবস্থা করতে হবে। খাদ্য (রুটি) সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধকে গৃহযুদ্ধে পরিণত করে সমগ্র ইউরোপ-ব্যাপী পুঁজিবাদের সংকটকে তীব্র এবং গভীর করতে হবে। সে ভাবেই তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন বিশ্ব প্রলেতারিয়াত বিপ্লবের। যে অন্তর্বর্তী সরকার বহাল ছিল সে সরকার অবশ্য রাশিয়ার মানুষের মন বোঝেনি। সরকার জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বহাল রাখলো। যুদ্ধকে দেশপ্রেমিক দায়িত্ব বলে ঘোষণা করলো। এতে করে মানুষের দুর্দশা বাড়লো। যুদ্ধ আনল আরও ধ্বংস। উদ্ভূত সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে লেনিন ভুল করলো না। থিসিসে তিনি আরও বললেন রাশিয়ায় যেটি ঘটছে সেটি বিপ্লবের প্রথম ধাপ। পরের ধাপে বুর্জোয়ার হাত থেকে ক্ষমতা নিতে হবে। ক্ষমতা দিতে হবে শ্রমিক এবং কৃষকের হাতে। তার নির্দেশ হলো রাশিয়ায় কোন পার্লামেন্টারি রিপাবলিকের প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন সোভিয়েতের রিপাবলিকের যেখানে ক্ষমতা থাকবে সোভিয়েত প্রতিনিধিদের হাতে। ভূমি সংস্কারের কথা ছিল তার ছয় নম্বর থিসিসে। ব্যাংক জাতীয়করণ এবং একটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক গড়ে তোলারও নির্দেশ ছিল যার দায়িত্বে থাকবে কৃষক এবং শ্রমিক শ্রেণীর প্রতিনিধি। সবশেষে ছিল একটি সতর্কবাণী। তিনি বলেছিলেন সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা বলশেভিকদের আশু দায়িত্ব নয়। প্রথমে নিশ্চিত করতে হবে উৎপাদন এবং পণ্য বিতরণের ওপর শ্রমিক ডেপুটিদের নিয়ন্ত্রণ। তার পরেই ভাবতে হবে সমাজতন্ত্রের কথা।

অক্টোবর বিপ্লব এবং লেনিন আমাদের মনে প্রায় সমার্থক হয়ে আছে। এই অর্থে না যে বিপ্লব তার হাতে সফল হয়েছিল। লেনিন ছিলেন রাজনৈতিক দূরদর্শিতাসম্পন্ন একজন মানুষ। সেই সাথে ছিল আন্দোলন পরিচালনার বুদ্ধিদীপ্ত ক্ষমতা। সেটি কেবল বিপ্লবের বাস্তব দিককে ঘিরে না। তার প্রতিভা কেবল সীমিত ছিল না মানুষের মন বুঝে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের মধ্যে। আরও ছিল তাত্ত্বিক দিক থেকে রাশিয়াকে সঠিক বিশ্লেষণের ক্ষমতা। বিপ্লবের আদর্শগত প্রস্তুতি তিনি শুরু করেছিলেন বহু আগে। বস্তুত ১৮৯৩ সাল থেকে। ওই সময় তিনি লিখেছিলেন রাশিয়ার কৃষকদের দুর্দশার কথা। ভূমির ওপর কুলাক শ্রেণীর আধিপত্যের বিরুদ্ধে রাগান্বিত বাক্যালাপ করেছেন তার লেখার মধ্য দিয়ে। ১৮৯৪ সালে তার লেখার বিষয়বস্তুতে স্থান পেয়েছিল সোশ্যাল ডেমোক্রাটদের অন্তঃ-দ্বন্দ্ব। “রাশিয়ায় পুঁজিবাদের বিকাশে” (১৮৯৯ সাল) সংখ্যাগত তথ্য দিয়ে তিনি দেখিয়েছিলেন কিভাবে পুঁজিবাদের সম্ভাবনাগুলি অঙ্কুরিত হচ্ছে রাশিয়ার মাটিতে। “কি করিতে হইবে” (১৯০২) লেখায় পার্টির উদ্দেশ্য এবং কৌশল নিয়ে আলোচনা করেছেন। প্রবন্ধের নামটি তিনি নিয়েছিলেন চেরনসেভস্কি নামের রুশ সাহিত্যিকের একই নামে লেখা উপন্যাস থেকে। “এক পা আগে দুই পা পেছনে” (১৯০৪) “সামাজিক বিপ্লবে সোশ্যাল ডেমোক্রাটদের দুটি কৌশল” (১৯০৪) ছিল পার্টির তাত্ত্বিক এবং বাস্তব কৌশলগত দিকগুলিকে আরও ধারালো করে উপস্থাপন করা। দর্শনের ওপর সমালোচনা-ধর্মী লেখাগুলি আমাকে পড়তে হয়েছিল ছাত্র থাকা অবস্থায়। “বস্তুবাদ এবং এম্পিরিও ক্রিটিসিজমে” (১৯০৯) তৎকালীন দার্শনিক মাখকে তিনি দ্বিধা-হীনভাবে সমালোচনা করেছিলেন। “সাম্রাজ্যবাদ: পুঁজিবাদের সর্বোচ্চ ধাপ” (১৯১৬) “রাষ্ট্র ও বিপ্লব” (১৯১৭) ছিল অক্টোবর বিপ্লবের প্রস্তুতির ক্ষেত্রে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান।



আগের অংশ পরের অংশ






Share on Facebook               Home Page             Published on: 22-Jan-2018

Coming Events:



Lakemba Blacktown Mascot
Minto Money raised so far





Lakemba Blacktown Mascot
Minto Money raised so far



Blacktown Lakemba Mascot
Minto Money raised so far







Blacktown Lakemba Mascot
Minto Money raised so far