bangla-sydney
bangla-sydney.com
News and views of Bangladeshi community in Australia












এই লিংক থেকে SolaimanLipi ডাউনলোড করে নিন


সিডনি পার্লামেন্ট হাউজে
ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন


বাংলা একাডেমি অস্ট্রেলিয়ার আমন্ত্রণে সিডনির পার্লামেন্ট হাউজে জড় হয়েছিলেন সিডনির বিভিন্ন ভাষা ও সম্প্রদায়ের মানুষ। মহান ভাষা দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এ বছর ১৯, ২০ ও ২১ ফেব্রুয়ারি একাডেমি আয়োজন করেছিল তিন দিন ব্যাপি অনুষ্ঠানমালা। এ অনুষ্ঠান গুলো হয়েছে সিডনির পার্লামেন্ট হাউস, একাডেমির এপিং ও ব্ল্যাকটাউন কেন্দ্রে।

প্রথম দিন ছিল ‘আমার ভাষা আমার স্বাধীনতা’ ইংরেজিতে ‘My Language My Freedom’ শীর্ষক সেমিনার। সেমিনারের সভাপতিত্ব করেন আন্তর্জাতিক সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ এবং সিডনি’র স্বনামধন্য রেডিও ‘টুএসইআর’এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিঃ স্তিভ আহার্ন। প্রধান অতিথি ছিলেন নিউ সাউথ ওয়েলস রাজের প্রিমিয়ারের বিশেষ প্রতিনিধি এবং পারামাটার সাংসদ ডঃ জেফ লি এমপি। সেমিনারের শুরুতেই ‘আমার ভাষা আমার স্বাধীনতা’ বিষয়ক পরিচালক আনোয়ার আকাশের লেখা চার পৃষ্ঠার নিরীক্ষণ ধর্মী একটি প্রস্তাবনা সবার জন্য বিতরণ করা হয়।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে অস্ট্রেলিয়ার আদিভাষা গুলো বিলুপ্ত হবার আশঙ্কা প্রকাশ করেন এবং বাংলা একাডেমির এ উদ্যোগকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানটির প্রতি তার সরকারের অব্যাহত সহযোগিতার আশ্বাস দেন এবং আগামীতে এ উদ্যোগ চালিয়ে যাবার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন।

অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতি-সেবী সংগঠন গুলো বাংলা একাডেমি অস্ট্রেলিয়ার প্রতি তাদের একাত্মতা প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসটি উদযাপন করেন। অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রচার মাধ্যম এবং একাডেমির মিডিয়া পার্টনার এসবিএস তাঁদের ৭৪টি ভাষায় ‘মাই ল্যাঙ্গুয়েজ মাই ফ্রীডম’অনুষ্ঠানের প্রচার প্রসঙ্গে অনুষ্ঠানের আগেই এসবিএসের কৌশলগত ও কমুনিটি সমন্বয়কারী ব্যবস্থাপক লিখিতভাবে একাডেমির পরিচালককে অবহিত করেন।

এ বছর থেকে রেডিও ‘টুএসইআর’ মিডিয়া পার্টনার হিসাবে যোগ দিয়েছে। স্কুল কার্যক্রমে হরন্সবি গার্লস হাইস্কুল ছাড়াও এ বছর নূতন সমন্বয় ঘটেছে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার ‘এডেলেড হাই স্কুল’। সবার উদ্দেশ্য এক এবং অভিন্ন; ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন এবং অস্ট্রেলিয়া সহ সারা বিশ্বের ‘মাতৃ ভাষা দিবসে’র প্রতি সম্মান জানানো।

অতিথিদের মাঝে ছিলেন ফেডারেশন অফ কমিউনিটি ল্যাঙ্গুয়েজ স্কুলের নির্বাহী সংগঠক মাইকেল ক্রিস্তোদুলু , হাঙ্গেরিয়ান কাউন্সিল এর প্রেসিডেন্ট ডঃ বেলা কার্ডওস, মোহাম্মাদ আলরুবাই, চিকিৎসক ও ভাষাবিদ ডঃ টেরেন্স মার্ক হলাহান প্রমুখ। মূল্যবান বক্তব্য রাখেন ভিয়েতনামী ল্যাঙ্গুয়েজ স্কুল শিক্ষক মিসেস টেমি ট্রেন , থাইউয়ান দাও, নামতুয়ান ট্রেন, মেডিটেরেনিয়ান ভাষা শিক্ষক, টার্কিশ ল্যাঙ্গুয়েজ প্রতিনিধি কারা আলী, দারি ল্যাঙ্গুয়েজ প্রতিনিধি হসেঞ্জাদা, এরাবিক স্কুলের মিঃ আদিদ আলরুবাই, টারেক জিলাউত, ডঃ হাসান সারোয়ার সহ অনেকেই মূল্যবান বক্তব্য রাখেন।

একাডেমির ডাকে সাড়া দিয়ে পেনরিথ সিলেকটিভ হাই স্কুলের ছাত্র ইমরান সারোয়ার ‘আন্তর্জাতিক মাতৃ ভাষা দিবস’ এর উদ্দেশ্যে নিবেদিত নিজের একটি লেখা সবাইকে পড়ে শোনান। লেখাটি পড়ে ইমরান ‘মা আমি তোমাকে ভালবাসি’ বলে নিজের মা ডঃ মাসরেকা সারোয়ারকে আলিঙ্গন করলে অভূতপূর্ব এক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

অতিথিরা অস্ট্রেলিয়ায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বাংলা একাডেমির এ আয়োজনকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালন করেন একাডেমির পরিচালক আনোয়ার আকাশ।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ভাষার স্কুল ছাত্রছাত্রীদের দ্বারা তৈরি ‘আই লাভ ইউ মাম’ বা ‘মা আমি তোমাকে ভালবাসি’ শিরোনামে মাতৃভাষার সুদীর্ঘ কয়েকটি ব্যানার প্রদর্শিত হয়েছে। যেখানে শতশত স্কুল ছাত্র-ছাত্রীরা নিজ মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে। নিউ সাউথ ওয়েলস এর পার্লামেন্ট হাউজে শাহীদ মিনারের পাদদেশে বসে পুরো অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয়েছে।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি এবং চেয়ারপার্সন সাংবাদিক মিঃ স্তিভ আহার্ন এ আয়োজনের জন্য একাডেমির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান এবং আগামীতে সকল ভাষার সমন্বয় করে এ প্রকল্পকে আরও সার্থক করে তোলার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন। অনুষ্ঠানে আগত সবাইকে তিনি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং আনন্দ-চিত্তে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানেন।

দ্বিতীয় দিন ২০ ফেব্রুয়ারি ছিল শহীদ মিনার নির্মাণ বিষয়ে ওয়ার্কশপ। একাডেমির এপিং কেন্দ্রে এ ওয়ার্কশপটি পরিচালনা করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থপতি ও একাডেমির অঙ্কন শিক্ষক অনিন্দিতা আহমেদ এবং পরিচালক আনোয়ার আকাশ। এদিন ১৯৫২ সালের প্রথম শহীদ মিনার নির্মাণের ইতিহাস ব্যাখ্যা করা হয় এবং প্রথম স্থপতিদের মধ্যে সাঈদ হায়দার ও অন্যান্যদের অবদানের কথা তুলে ধরা হয়। বর্তমানের মুলনক্সা প্রসঙ্গে স্থপতি হামিদুর রহমানের নক্সাটি একে দেখান অনিন্দিতা আহমেদ। একাডেমির শিশুরা এ সময়ে তাদের সামনে তুলে ধরা শহীদ মিনারের ছবি আঁকে। এবং থিয়েটার সঞ্চালনার মাধ্যমে নিজেরাই শহীদ মিনার এর প্রতিকৃতি ধারণ করে। এ ছাড়াও শহীদ মিনার নির্মাণের ওপর একটি তথ্যমূলক ভিডিও দেখানো হয়। অনুষ্ঠানটি সমন্বয় করেন এপিং কেন্দ্রের তানিয়া চৌধুরী।

তৃতীয় দিন ছিল ২১ ফেব্রুয়ারি। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে বাস্তব জীবনে প্রয়োগের গুরুত্ব তুলে ধরার আসর বসেছিল একাডেমির ব্ল্যাকটাউন কেন্দ্রে। বাঙ্গালী সহ অন্যান্য ভাষার মানুষের উপস্থিতিতে সমৃদ্ধ হয়েছিল একুশের বইমেলা এবং ভাষার মেলা। প্রথম দিন পার্লামেন্ট হাউজের মত শেষ দিনেও ব্ল্যাকটাউন কেন্দ্রেও অস্থায়ী শহীদ মিনারটি স্থাপন করা হয়।

শহীদ মিনারের পাদদেশে ভাষার প্রদর্শনী, ভিন্ন ভাষার মানুষের সাথে আলাপ চারিতা, সুন্দর হাতের লেখা প্রতিযোগিতা এবং চিত্রাঙ্কনে অংশ নিয়ে সবাই বাংলাদেশের একুশকে কিছুটা হলেও ফিরে পেয়েছিলেন এদিন। বইমেলা, খাবার ও পানীয়তে সবার অংশ গ্রহণ, একান্তে বই পড়ার আনন্দ; সব মিলে একটা সুন্দর আবহ তৈরি করেছিল এবারের আয়োজন।

বই মেলায় পাওয়া গিয়েছে বাংলা একাডেমি, অবসর, অনন্যা, অঙ্কুর, অন্নেশা, অন্যপ্রকাশ, বাংলা প্রকাশ, বিদ্যাপ্রকাশ, সাহিত্য প্রকাশ, চন্দ্রাবতী, চারুলিপি, দিব্যপ্রকাশ, ইত্যাদি, গতিধারা, কথামেলা, ন্যাশনাল, রোদেলা, সাহিত্য প্রকাশ, শুদ্ধস্বর,সময়, স্টুডেন্ট ওয়েজ, তাম্রলিপি, চন্দ্রাবতী সহ অন্যান্য প্রকাশকের বই।
‘আমার ভাষা আমার স্বাধীনতা’ পর্বে ভিন্ন ভাষার মানুষদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন একাডেমির স্কুল কার্যক্রমের অধ্যক্ষ মিসেস সাইদা হায়দার।

ছোটদের দুটি গ্রুপে ছবি আঁকা পরিচালনা করেন অনিন্দিতা আহমেদ। তিনটি গ্রুপে ছোট, মধ্যম ও বড়দের জন্য সুন্দর হাতের লেখা প্রতিযোগিতা সমন্বয় করেন মাসরেকা সারোয়ার, শরিফা শারমিন এবং তানিয়া চৌধুরী। ইমরান সারোয়ার মাতৃভাষার ওপর নিজের লেখা পড়ে শোনান উপস্থিত সুধীজনদের। বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন সাইদা হায়দার এবং মুনিরা বাসার। বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার প্রদান করেন প্রকৌশলী ফজলে কাদের। আলোচনা পর্বে বাংলা লিখতে পড়তে ও বলতে পারার গুরুত্ব তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন একাডেমির স্কুল শাখার অধ্যক্ষ সাইদা হায়দার এবং অভিভাবক প্রতিনিধি ডঃ মাসরেকা সারোয়ার।

একাডেমি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ উপলক্ষে একটি সুদৃশ্য পোস্টার প্রকাশ করে এবং প্রচার মাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রকাশ করে। রেডিও টুএসইআর একটি ডিজিটাল প্রচার অব্যাহত রাখে অনুষ্ঠানের শেষ দিন পর্যন্ত।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে বাংলা শিক্ষায় প্রতিটি বাবা-মা কে আরও সচেষ্ট হবার অনুরোধ করেন অভিভাবক ও শিক্ষক প্রতিনিধিরা। এ ছাড়াও গত তিনদিনের এ মহা কর্মযজ্ঞে উপস্থিতি এবং সহযোগিতার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন একাডেমির পরিচালক আনোয়ার আকাশ।




- অনিন্দিতা আহমেদ/ তানিয়া চৌধুরী/ শরিফা শারমিন, সিডনি ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬




Share on Facebook               Home Page             Published on: 28-Feb-2016

Coming Events:
বৃষ্টির সম্ভাবনার কারণে মেলার তারিখ ১ দিন পিছিয়ে ২১ এপ্রিল ২০২৪ (রবিবার) করা হয়েছে......




A day full of activities, games and fun.







Lakemba Blacktown Mascot
Minto Money raised so far





Lakemba Blacktown Mascot
Minto Money raised so far



Blacktown Lakemba Mascot
Minto Money raised so far







Blacktown Lakemba Mascot
Minto Money raised so far