একুশের চেতনা ছড়িয়ে যাক গ্রামে গঞ্জে
গাঁইয়া বন্ধু রে আজাদ আলম
(বাংলা ভাষার চেহারা মাধুর্য যেমন পাল্টে যাচ্ছে বিদেশী ভাষার চর্চার আধিক্যে ঠিক তেমনি ভাবে নীলফামারী জেলার তথা অনেক জেলার আঞ্চলিক ভাষা থেকে বিলুপ্ত হচ্ছে অনেক শব্দের মালা অনেক প্রবচনের মঞ্জুরী। আমার ছেলেবেলার এক বন্ধু ফেসবুকে "শাখামাছার হাট" খুলে বসেছে। উদ্দেশ্য একটাই, হালকা রসালো আলাপচারিতার মধ্য দিয়ে নীলফামারী জেলার আঞ্চলিক ভাষা এবং গৌরবময় ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখা, উজ্জীবিত করা। তার এবং তার মত যারা আঞ্চলিক ভাষার পূজারি এই ভাষার মাসে সবার জন্য শুভকামনা )
সেই, তুই যে গেলু আজশাহী আর মুই তো গেনু ঢাকা। হ্যারেযা গেইনো ক্যামবা করি হইল্ না তো আর দেখা। ঘুরতে থাকিল্ ঘড়ির কাটা চলিল্ গরুর গাড়ি দ্যাশ বেদ্যাশের আস্তায় আস্তায় ঢোংগোত ঢোংগোত করি। জীবন যুদ্ধোত্ তুইও ব্যস্ত মুইও ব্যস্ত খালি দৌড়াদৌড়ি । তারপরেও খুঁজুলু মোক সিন্ডার আগুন ন্যালটেং, নম্পো ধরি। নোটিশ দিলু " কায় কুত্তি আছিস তোরা দেখি যা আসিয়া, শাখামাছার চা'র দোকানোত আঁছো যে বসিয়া। হ্যাশকারি আর করিস না তুই সাটাউ করি আয়। দ্যাশের বুলিত্ আও করিতে জিউ যে ব্যারে যায়। হামরা যদি না কই কথা, না থুই নেকি বই পত্তরের পাতাত্ গাঁইয়া ভাষা গুরা হইবে ছাতু হইবে, শহরী ভাষার যাতাত্।" নোটিশ প্যায়া চাংগা হনু উস্টা খানু শিকোড়োত্ পরিল্ টান। দেওনাই নদীত জাগি উঠিল খলখলেয়া আষাঢ় মাসিয়া বান। হাউস মিটিয়া কতা কবার মানূষ পানু বন্ধুক থুনু বান্দি। গলা ধরি ঢেইল্লা করি চুমা দ্যাঁও তোক চৌক দুইটা মুন্দি।
( ঢোংগোত ঢোংগোত - হেলে দুলে, শিন্ডা - পাটখড়ি, ন্যালটেং - লন্ঠন, নম্পো - কুপি, কায় কুত্তি - কে কোথায়, হ্যাশকারি - দেরি, সাটাউ - জলদি, জিউ- জীবন, উস্টা - হোঁচট, খলখলেয়া - শশব্দে, হাউস মিটিয়া- ইচ্ছামত,ঢেইল্লা - অনেক)
আজাদ আলম, সিডনি
|