এক হালি সরস ছড়া আজাদ আলম
উল্টো ধ্যানে বসিস না
ফোন করলে করতে পারিস, না চাইলে করিস না তোমায় যদি করি ফোন, বিশ মিনিটে ছাড়িস না হাত ইশারায় ডাকতে পারিস, না চাইলে ডাকিস না আমার ডাক শুনলে তবে, দূর উদাসীন থাকিস না চোখ টিপলে টিপতে পারিস, না চাইলে টিপিস না আমার দু'চোখ টিপ দিবে না, এমন কথা ভাবিস না নাগাল পেলে হাতটা ধরিস, না চাইলে ধরিস না আমার হাত ধরতে গেলে, এক ইঞ্চিও নড়িস না। বুকের খাঁচায় পুষতে পারিস, না চাইলে পুষিস না আমার প্রাণের আহবানে, উল্টো ধ্যানে বসিস না.
দোষ কি আমার!
একা একা বেশ ছিলাম ছিল কম চাওয়া মনের বৃন্দাবনে ছিল ফ্রেশ ফুরফুরে হাওয়া গৃহিণীর হাঁড়ি মুখে শুধু শুনি নাই আর নাই পড়শির আছে মেলা, হাড়ি হাড়ি আমাদেরও চাই “পারিব না” কথাটি আলবৎ বলিবে না আর চাকুরীর বেতনে না হলে ধর উপরি কারবার”। আমি বলি,” উপরে নয় গো বধূ নীচ দিকে চাও গড্ডালিকার প্রবাহে শুধু শুধু ভাসাইও না নাও কত কিছু ছাড়া চলে সদানন্দ অবিনাশ কাকা বেশুমার সুখের সংসার তার হাসিখুশি মাখা চাকুরী তো সমমান,বাসা ভাড়া বেতনও সমান ছেলে মেয়ে বউ শালা নিয়ে থাকে ছিমছাম দেখলেই মনে হয় সার্থক জীবন চলমান সুখ দু’ দণ্ড কথার পরশেই মোর ভরে দ্যায় বুক”।
কথায় ভিজলো না গিন্নীর চিড়ে হলো যা হবার অগত্যা পিত্তনাশ, দ্বারস্থ হলাম উপরি পাওনার আসিলো অর্থ সামাজিক যশ আপাত: প্রশান্তি বাড়িলো টেনশন মানসিক বাড়িলো বিভ্রান্তি খুনসুটি লাগলেই বধূ সৌদামনি টিপ্পনী কাটে “ঘুষখোর,জোচ্চোর হাড়ি কিন্তু ভেঙ্গে দেবো হাটে!” একি শুনি! যার তরে করি চুরি সেই বলে চোর রাত জেগে কাটি সিঁদ সেই কিনা খুরে মোর গোর
পরশ্রীকাতরতা, খাই খাই প্রবণতা ব্যাধি সামাজিক এহেন ইঁদুর দৌড়ে হারাবে পথের দিশা, হাঁটবে বেঠিক
যে কেউ নেতা
সকাল থেকেই বাকবিতণ্ডা, মেজাজ ভালো না মুখ বেচারা গোমরা-মুখো, নেয়নি পেটে দানা তাহার দাবী আমিই খাওয়াই, সব জাতীয় অন্ন, সেই কারনেই শক্তি পেয়ে, তোমরা সবাই ধন্য। আমিই যদি না হই বস, বসটা হবে কে? তোদের কাছে প্রশ্ন আমার, খাটি জবাব দে। তড়াত করে লাফিয়ে উঠে, মেজাজ গরম মাথা। চুপ থাকো হে বড়মুখো, বলছ কি সব যাতা মাথার মধ্যে মগজ মণি, কত কিমৎ রাখে রাজার ন্যায় শাসিয়ে বেড়ায়, বিশাল দেহ টাকে হস্ত দ্বয়ের মেজাজ চটা, কয় কি মাথামোটা! বস হতে চাও থাকতে আমি? হবে নাতো সেটা। আমি যদি কাজ না করি , কাদের কামাই খাবি না খেয়ে তো পটাস পটল, এমনি মারা যাবি হাসছে পা তোদের দেখি, নাইকো কোনই ডর সব শালারা মাফি মাংগ, আমায় জাপটে ধর থমকে আমি দাড়াই যদি, ক্যামনে কোথা যাবি আমায় লিডার মানতে হবে, নইলে লাত্থি খাবি এতসব হট্টগোলে গুহ্য-বাবু, ছিল চুপটি মেরে বুকে খানিক সাহস নিয়ে, দাঁড়ায় করজোড়ে “নেতা হবার বহুত খায়েস, শেষ ইচ্ছা ভাই সুপ্রিয় সব সহকর্মিরা, আশীর্বাদ যে চাই”। সব সাথীরা হেসে মরে, কাদায় দিল গড়াগড়ি মলদ্বার মিয়াঁ ফুঁসলো রাগে, খিড়কি বন্ধ করি। “হাসছো হেলায় দাম দিলে না, আমি তুচ্ছ তাই, আটলাম ছিপি টেরটা পাবে, ঘুমোতে আমি যাই।“ মলত্যাগ বন্ধ গ্যাস ট্র্যাপে, পেট পটকা ফেঁপে সারা বদন হলুদ বরণ,উদর ভয়ে কাঁপে। মগজ বিকল নেতিয়ে গেছে, হাত পায়েরা সব বাড়ছে বুকের ধরপরানি, হায় হোসেনি রব হামবড়া ভাব ছেড়ে দিল, রনে দিল সব ভঙ্গ গুহ্য-বাবু লিডার হলো, বাঁচলো সকল অঙ্গ ।
এই কবিতার সার মর্ম, মুল নীতি কথা যে কেউ নেতা হতে পারে, লাগে না বড় মাথা।
কপালে আছে দুর্গতি!
আজকে আমার ছুটির দিনে, বিছানা বালিশ বেঘোর নিনে ঘরবাড়ি সব ফাঁকা । সবাই গেছে যে যার কাজে আমিই শুধু আমার মাঝে দুলছি একা একা। শীতের সকাল আলোর ঢল, স্বচ্ছ আকাশ বাতাস নিটোল ভিজছে রোদে বারান্দাটাও। ঝরছে গাছের বুড়ো পাতা, ঘুরছে মনে ভাব কবিতা সঙ্গী বিহীন জীবন নাও”। হঠাত যেন বিষম খেলাম, ধরায় ধরাস ফিরে এলাম ধুত্তরি ছাই কি সব ভাবি বাড়ছে বেলা সকাল থেকে আর না এখন কল্পলোকে মেটাই আগে পেটের দাবি নাস্তাটাতো খেয়ে নেই, ভুখ লেগেছে এমনিতেই পালটে যাবে মনের ভাব নিলাম থালায় ভাজি রুটি, চলবে এতেই মোটামুটি থাকলে সাথে চায়ের কাপ বারান্দাটার বেঞ্চে বসে, খাচ্ছি ভাজি মুখ ঠেসে আউলা মন হেসেই কুটি মন মনুয়া অন্য তালে, ভাজিই খেলাম বেখেয়ালে যায়নি পেটে কোনই রুটি। রুটির থালা বেবাক ভরা, বাটির ভাজি শূন্য সারা কাপের চা ঠাণ্ডা প্রায় আবার কোন ছন্দে পেলো, খাবার খেয়াল এলোমেলো সকাল শেষে দুপুর দাড়ায়। হাসছি নিজেই মিটি মিটি, এমন ভোলা ছেলের জুটি মেলানো কি সহজ অতি। তাইতো হতাশ বড় আপা, ক্যামনে যে ঘুচবে ঢ্যাঁপা “তোর কপালের দুর্গতি”!
|