একুশে কর্নারের শুভ উদ্বোধন ক্ষুদ্র পরিসরে বৃহত্তর আহবান
আজাদ আলম:আজাদ আলম: ১৯৫২ সাল থেকে ২০০০ সাল। প্রায় পঞ্চাশ বছরের মাথায় ২১ শে ফেব্রুয়ারি তথা শহিদ, বরকত, সালাম, রফিক দের রক্তমাখা দিবসটি স্বীকৃতি পায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে। বাংলা ভাষার গর্ব গাঁথা ছড়িয়ে পড়ে পৃথিবীর প্রতিটি কর্নারে। মায়ের মুখের ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখতে, হায়েনাদের আগ্রাসী থাবা থেকে মুক্ত রাখতে বাঙ্গালীরা রক্ত দিয়েছে, জীবন দিয়েছে এ যেন অবিশ্বাস্য অনেকের কাছে।
সকল মায়ের ভাষাই তার সন্তানদের কাছে প্রাণপ্রিয়। অথচ পৃথিবী থেকে বিদায় নিচ্ছে প্রতিদিন অনেক দেশের অনেক মায়ের ভাষা। আঞ্চলিক ভাষাগুলো লোপ পাচ্ছে আশঙ্কাজনক হারে। UNESCO ( United Nations Educational Scientific and Cultural Organisation) charter সমস্ত ভাষাগুলোকে সংরক্ষণের প্রস্তাব থাকলেও বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া হয় নি তেমন।
অস্ট্রেলিয়ার প্রবাসী বাঙালিরা সামনে এসেছেন এই মহৎ কাজটিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। ২০০৬ সালে সিডনির এশফিল্ড পার্কে প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার স্মৃতি সৌধ নির্মাণের মধ্য দিয়ে নতুন ভাবে পদযাত্রা শুরু হয় এর। জন্ম নেয় একটি কার্যকরী সংগঠনের। এম এল সি ইন্টারন্যাশনাল। Mother Language Conserve International.
ছোট একটি সংগঠন অথচ হাতে নিয়েছে বিশাল দায়িত্ব। পৃথিবীর সকল ভাষাভাষীদের ভাষা সংরক্ষণ। হারিয়ে গিয়েছে বা হারিয়ে যেতে বসেছে এমন ভাষাগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার প্রত্যয়। তারই রশি ধরে আজ সৃষ্টি হলো যুগান্তকারী এক অধ্যায়র। একুশে কর্নার। কাম্বারল্যান্ড কাউন্সিলের অবার্ন লাইব্রেরীতে উদ্বোধন করা হল ভাষা সংরক্ষণের একটি শেলফ। যেখানে থাকছে বিভিন্ন ভাষার বর্ণমালা এবং এখান থেকে পাওয়া যাবে এই এলাকার প্রচলিত অথবা হারিয়ে যাওয়া ভাষার বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত পাওয়ার দিক নির্দেশিকা। এই ছোট্ট একটি শেলফ । দুয়ার খুলে দিবে ভাষার বিশাল সাগরে প্রবেশের।
যে বাঙ্গালিরা একদিন জীবন দিয়েছিল মাতৃভাষা রক্ষার্থে সেই বাঙ্গালিরাই আজ হাতে নিয়েছে পৃথিবীর সকল ভাষাভাষী দের মুখের ভাষা যাতে হারিয়ে না যায় সেই মহৎ সুদূরপ্রসারী পদক্ষেপ।
Mother Language Conserve (M L C) International এর এই কার্যক্রম সফলতার সাথে এগিয়ে চলুক। অতি দ্রুততার সাথে একুশে কর্নার স্থাপিত হোক বিশ্বের সকল পাঠাগারে।
আজাদ আলম, সিডনি, অস্ট্রেলিয়া
|