মুকুল, তুমি চলে গেলে বলে গেলে না আশীষ বাবলু
এই মে মাসে মুকুল চলে গেছে এক বছর হলো। মুকুল আমার খুব কাছের মানুষ ছিল। একান্ত প্রিয়জন। ওর চলে যাবার দুইদিন আগে কথা বললাম। আগামী মাসে কি করবো তার পরিকল্পনা করলাম তারপর হঠাৎ খবর পেলাম সে নেই। মৃত্যু সহজ, তবে এতটা সহজ কখনো ভাবিনি।
একটা প্রাণবন্ত সুন্দর মনের মানুষ ছিল মুকুল। কিছু কিছু মানুষ আছে যাদের উপস্থিতিতে অন্ধকার কেটে যায়। মুকুল ছিল তেমনই একজন। ও জীবন ধারণ করতনা, করতো উদযাপন। গান, সিনেমা, নাটক, ইলেক্ট্রনিক্স, বাগান, সাহিত্য এমন কিছু নেই যাতে তার উৎসাহ ছিলনা। আমি ছাই-ভস্ম যা লিখতাম ও ছিল তার অন্ধ পাঠক। ওর মাত্রাতিরিক্ত প্রশংসায় কখনো কখনো ভয় পেতাম। কিছু লেখার সাথে সাথে ওর কমেন্ট চলে আসতো। মুকুলের কমেন্ট আসবেনা বলেই কি গত এক বছর তেমন কিছুই লিখিনি?
জীবনের শুরু এবং শেষটা আমাদের হাতে নেই, তবে মাঝের সময়টা আমাদের হাতে - এই কথাটা বিশ্বাস করতাম। কিন্তু মুকুল চলে যাবার পর মনে হলো মাঝের সময় বলে কিছু নেই। এতো অল্প বয়সে এটা কি একটা যাবার সময় হলো! ঘর সংসার পরে আছে, পরে আছে অসমাপ্ত কাজ!
স্ত্রী লিসা আর দুটো ফুটফুটে ছেলে রেখে চলে গেছে মুকুল। লিসা ছাড়া মুকুলকে একা কখনো দেখিনি। শুধু এক বিয়ে বাড়ীতে লিসা এসেছিল একা, মুকুল ছিল ঢাকায়। করুন মুখে লিসা বলেছিল - এমন হৈ চৈ ও পছন্দ করে, সত্যি দাদা ওকে খুব মিস করছি। সেই লিসা আজকাল কি দুঃখ বয়ে বেড়াচ্ছে বুঝতে পারি, যার কোন পরিমাপ নেই।
তবে ভালবাসার মানুষদের মৃত্যু হয়না। ওরা নিঃশব্দে আমাদের সাথে হেঁটে বেড়ায়। আকাশে যখন তারায় ভরে যায়, তখন ঐ চকমকে তারাটাকে মনে হয় মুকুল। ওর সেই লক্ষ-টাকা দামের হাসিটা দিয়ে বলছে, চিন্তা করো না, আমি ভাল আছি।
আশীষ বাবলু, সিডনি, ashisbablu13@yahoo.com.au
|