এইতো জীবন! আশীষ বাবলু
দাদা বলতেন, পঁচাত্তর পেরিয়েছি এখন জীবন ঈশ্বরের দেওয়া গ্রেস মার্কে চলছে।
বৌদি বলতেন, এক কাপ চা নিজের হাতে বানিয়ে খেতে পারে না। রান্না করাতো ছেরে দাও! আমি যদি তোমার দাদার আগে চলে যাই, তবে যে ওর কি হবে? আমি হাসতে হাসতে বলতাম, কেন এমন ছাই-পাশ ভাবছ!
আমাকে একা পেলে দাদারও ঐ একই বক্তব্য, সন্তান মানুষ করতে করতে তোমার বৌদি বুড়ো হয়ে গেল। সন্তান দুজনেই এখন আমেরিকায় ওদের সংসার নিয়ে ব্যস্ত। কালে-ভদ্রে আমাদের কাছে আসে। এটি-এম থেকে টাকা তোলাটাও তোমর বৌদিকে শেখাতে পারলাম না, বিল-পত্র, ব্যাংকের পাশবুকে কি আছে না আছে কিছুইতো জানে না। আমি আগে চলে গেলে তোমার বৌদির যে কি হবে?
দাদার হাত চেপে আমি একই ভাবে বলতাম, কেন এই সব ছাই-পাশ বলছ!
তারপর সত্যি সত্যি চলে যাবার দিন এলো। দুজনের একজন আজ চলে যাচ্ছে। যদিও আলাদা বিছানায় তবে একই ঘরে ওদের দিন কাটতো। একজন এই দিকে অন্য জন ঐ দিকে। ছেলে মেয়েদের পাঠানো টাকায় চার পাঁচটা নার্স, চব্বিশ ঘণ্টা ওদের দেখতো।
আজ একজন চলে যাচ্ছে অথচ কি আশ্চর্য অন্যজন পাশে শুয়ে থেকেও বুঝতে পারছে না!
আশীষ বাবলু, সিডনি, ashisbablu13@yahoo.com.au
|