একজোড়া চিচিঙ্গা এবং নস্টালজিক বৈশাখ আসাদ শামস
উৎসর্গ - শান্তির দূত রবীন্দ্রনাথ এবং যুগে যুগে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নিহত লক্ষ কোটি নারী পুরুষদেরকে।
পরের অংশ
আজ রুকুর খুব আনন্দ হচ্ছে! আজ পহেলা বৈশাখ! মা আজকে বেবি আপাকে ব'লে ওর জন্যে ওর প্রিয় 'রেখা ভাজি' করে রেখেছে। সাথে পটল ভাজি, কুঁচো চিংড়ি দিয়ে লাল শাকের চচ্চড়ি, পুঁইশাক আর ইলিশের চচ্চড়ি, শুকনো কাঁঠালের বিচি আর গরুর গোস্ত দিয়ে ঝাল ভুনা, কচুর লতি দিয়ে ঝাল চিংড়ি, পালঙ শাক আর চাপিলা মাছের পোড়া পোড়া চচ্চড়ি, রুই মাছ ভুনা, পাবদা মাছের পেঁয়াজ ভুনা, কৈ মাছের সাথে অল্প তেঁতুলের অমৃত-কারী, আলু বেগুনের সাথে নতুন তাজা কাজলী মাছের চচ্চড়ি, পাবদা মাছের ঝাল ভুনা, ইলিশ মাছ আর পুঁটি মাছ ভাজি আলাদা করেও আছে, কৈ মাছ আর রুই মাছের দোপেয়াজা আলাদা ক'রে, ঘন ডালের পাশে পাতলা ডাল। আচ্ছা, মা এতকিছু বলছেন আমার জন্যে করেছে কিন্তু এইসব চচ্চড়ি মচ্চড়ি তো জিল্লুরের না পছন্দ! মা কি তবে জানেন আজকে জিল্লুর আসতে পারে এ বাড়িতে? কিন্তু মা কি ক'রে জানেন জিল্লুরের পছন্দের কথা! মাত্র একবারই না জিল্লুর এসেছিল এ বাড়িতে। সেই সেকেন্ড ইয়ারের কথা। কথাটা মনে পড়লেই রুকু আনন্দে লজ্জায় আর ভালবাসার রঙে রাঙা হয়ে যায়!
রুকু সে বার ছুটি শেষে রেবা আপার বিয়ে উপলক্ষে একটু বেশীদিন বাড়িতে কাটাচ্ছিল। ওমা! হঠাৎ একদিন দেখে নিচে উঠোনে জিল্লুর আর নির্মল দাঁড়িয়ে! দেখে আনন্দে, বিস্ময়ে রুকু কাঠ হয়ে গেছিলো। এসে দিব্বি রেবা আপার সাথে গল্প জুড়ে দিয়েছে। বানিয়ে বানিয়ে বলছে, রুকু এই কালচারাল ফাংশনে খুব ভাইটাল কিছু রোলে আছে কাজেই ওর খবর নেবার জন্যেই নাকি এখানে ছুটে এসেছে। আরও বলছে ঢাকা থেকে এ বাসায় ট্রাঙ্ক কল বুক করেও লাইন পায়নি। রুকু দৌড়ে গিয়ে চেক ক'রে এসে দ্যাখে আসলেই ফোনটা ডেড। রুকু বলতে চাইলো পেজার করলেই পারতে! কথাটা মনে হতেই নিজেই হেসে গড়িয়ে পরছে। গত ক'দিন যাবত রহমত খালুর কোমরে 'পেজার' নামক ওই অদ্ভুত মেশিনটির ঘন ঘন ব্যবহার দেখে জিনিসটি ওর জিল্লুরের কাছেও দেখার কল্পনা করতে করতে বাস্তব ভেবে নিয়েছে। খালু জানিয়েছে যন্ত্রটির নাম 'পেজার'। এটা দিয়ে রেডিও সিগনাল রিসিভ করা যায় অন্য টেলিফোন অথবা পেজার থেকে পাঠালে। "আর তখন বোঝা যায় ওখান থেকে কেউ তোমাকে চাচ্ছে। তখন তোমাকে প্রেরকের টেলিফোনে অন্য ল্যান্ড লাইন থেকে কল করে প্রয়োজনীয় কথা বলে নিতে পারো।" খালু আরও জানিয়েছেন বহুজাতিক কোম্পানি একটি গ্রুপ বাংলাদেশে শুরু করেছে এই পেজার সিস্টেম। এটি নিতে তাঁর কয়েক লাখ টাকা খরচ হয়েছে। রুকু প্রশ্ন করেছিল, "এটা দিয়ে সরাসরি অন্য ফোনে কথা বলা যায় না? " রহমত খালু ঝানু ব্যবসায়ী, বুদ্ধিমান। নিয়মিত দেশ বিদেশের খবর পড়েন, বিবিসি সিএনএন শোনেন। বললেন, "তখন সেটাকে বলে মোবাইল ফোন। এটা এখনও বাংলাদেশে শুরু হয় নি। হলে ব্যাপারটা খুব ইন্টারেস্টিং হবে কি বল মা? " রুকু মাথা নেড়ে সায় দিয়েছিল। কিন্তু একটা জিনিস বুঝতে পারে নি এখান থেকে খালু পেজারের সিগনাল রিসিভ করতে পারছেন কিনা। রুকু যতদূর জানে শুধুমাত্র ঢাকা শহরেই সীমাবদ্ধ গণ্ডিতে এই পেজার সিস্টেম চলছে। ভবিষ্যতে হয়ত এর রেঞ্জ বাড়ানো হতে পারে। কিন্তু খালুকে যেভাবে উদ্বিগ্ন ভাবে বার বার ফোনে ক্লায়েন্টদের সাথে কথা বলতে দেখছেন তাতে এই সন্দেহের কথা রুকু তাকে বলতে সাহস পায় নি। মানুষকে অফ ক'রে দিয়ে একটি প্রগলভতায় পরিপূর্ণ আসরে শ্রাবণের মেঘ না বসানোর এই চমৎকার গুনটি রুকু তার মা তাহেরুন্নেছা থেকে পেয়েছে কিংবা অর্জন করেছে।
নির্মল এ শহরেরই ছেলে। রুকু আর জিল্লুরের ক্লাসমেট। আসবার সময় তাড়াহুড়ো করে ট্রেনে আসাতে স্টুডেন্টস কনসেশন এ টিকেট পায়নি। নির্মল যুক্তি দিয়েছে, চল দুজনে মিলে একটা 'ফুল টিকেট' কাটি। কনসেশন রেট। চেকার কে বললেই হবে। "কিন্তু কি ভাগ্য! ধরা পড়েছে এক কঠোর 'টিটিই ' র কাছে। টিকেটটি ছিলো জিল্লুরের কাছে ; কাজেই টিটিই নির্মলকে নজরবন্দী ক'রে ভয় দেখালো মোবাইল কোর্টে দেবার। জিল্লুর টিটিই কে বলল,"আমি অপরাধী, আমাকে নিন ; ও কে ছেড়ে দিন। " টিটিই নাকি কথা শোনেনি। কিন্তু নির্মল বুদ্ধিমান! কোন ফাঁকে টিটিই র চোখ ফাঁকি দিয়ে ছোট এক স্টেশনে নেমে একটা টিকেট কেটে নিয়ে এসেছে! এরপর দুজনে সটকে অন্য বগীতে হাওয়া! এই গল্প রুকু শুনে খুব রাগ করেছিল জিল্লুর আর নির্মলের উপর। পদবীটা যে টিটি নয় 'টি.টি.ই ' এটা জিল্লুরই ওকে শিখিয়েছে। আগে রুকু অনেকের মত 'টিটি' বলত। জিল্লুর তাকে বলেছে, "হোয়াট? লোকটা কি ট্রেনের টিকেট? পদবীটা হোলো টি.টি.ই। ট্রেন টিকেট এক্জামিনার। "এজন্য রুকু লোকটাকে বন্ধু হলেও মাঝে মাঝে শ্রদ্ধার চোখে দ্যাখে। একই ক্লাসে পড়ে কিন্তু যেনো মাস্টারের মত জ্ঞান রাখে!
মা আজ খোলা পিঠা বানিয়েছেন গোপালের মা কে দিয়ে। গোপালের মা ফরিদপুর অঞ্চলের মেয়ে। কোন কালে ওর বাবা এ অঞ্চলে এসে ভিটেমাটি ক'রে থেকে গিয়েছে। আগে সে এটাকে চিতুই পিঠে বলত। এখন রুকু দের মত ক'রে 'খোলা পিঠে' বলে। রুকুর আম্মাকে আম্মা ডাকে। খুব মায়া ক'রে কথা বলে; ততোধিক মায়া দিয়ে খোলা পিঠা বানায়। সাত্তার ভাই এর স্ত্রী এসেছে 'ম্যাড়া পিঠা' বানাতে। গোপালের মা বলে 'ঢ্যালা পিঠা'। ওঁদের দেশে নাকি এ পিঠার এটাই নাম।
চিতুই পিঠা জিল্লুর পছন্দ করে। পিঠা গরম থাকতে থাকতে মরিচ ধনেপাতা লবণ আর রসুন এর পেস্ট দিয়ে অথবা ঝাল গোস্ত দিয়ে। রুকুর আবার তা পছন্দ নয়। রুকু চায় ওটাকে চিনি অথবা চা দিয়ে কিংবা দুধ চিতুই ক'রে পরদিন ফ্রিজ থেকে বের ক'রে খেতে। মা সাত্তার ভাইকে ঝাল গোস্ত আর ঝাল সস করার পরামর্শ দিলেন। রুকু অবাক হয়ে মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো! মা নির্বিকার!
"আপা মেলায় আজ কি শাড়ি প'রে যাবেন? " রূমুর এই টেলিফোনটা পেয়ে রুকু অতীত ছেড়ে বর্তমানে পা ফেললো।
আজ প্যারামাটা নদীর পাড়ে বৈশাখী মেলা। রুকুর ওপর দায়িত্ব পড়েছে ফটোগ্রাফির। রুকু তো অবাক! এত লোক কোত্থেকে এলো? রুকুর একটু দেরী হয়ে গিয়েছে। গতকাল ফ্লু ভ্যাকসিন নিয়েছে। গা একটু ম্যাজম্যাজ করছে। ডাক্তার অবশ্য এ বিষয়ে ওকে সব ডিটেইল ক'রে তারপর ভ্যাকসিন দিয়েছে। ডাক্তার যদিও বাংলাদেশী অরিজিন কিন্তু কথা বললেন একেবারে এদেশে জন্মানো ডাক্তারদের মত ক'রে। রুকু আশ্চর্য হয় যখন এই বিদেশে ডিগ্রীধারী ডাক্তাররাই দেশে যান তখন কিন্তু তিনি ঠিক এরকম আচরণ করেন না। গতবছর দেশে গিয়ে এক অস্ট্রেলিয়া ফেরত ডাক্তার দেখাতে গিয়ে রুকু সেই ডাক্তার থেকে বিদেশের ডাক্তারদের মত এম্প্যাথিক আচরণ পায় নি। এর কারণ কি? রুকু ভাবতে থাকে। রুকু জিল্লুরের মায়ের মত ক'রে ব'লে হেসে ওঠে, "যোস্যিন দেশে যদাচার!"
অনেক মানুষের ছবি তুলতে গিয়ে রুকু হিমশিম। আতিক, মাসুম, আকরাম, মাজু, বেবি, শামীম ভাই, জেবা, শফিক ভাই, আতিক, গিয়াস,শাহজাদা, আসাদ, পারভেজ, সালাউদ্দিন, সঞ্জু ভাই, শায়েখ ভাই, সোহেল, জিল্লুর, গামা ভাই, স্বপন জেসমিন, জেসি, নাজমুল, ফাহমি, লিমা, টিটু শাহ, বাবু, মামুন, আফজাল, চন্দন, মূসা ভাই, কবির, মতি ভাই, স্বপন, বাপ্পি, জিকু, আজিজ, কামাল ভাই সব্বাই এসেছে! কবি রাশেদ শুভ মঞ্চে দাঁড়িয়ে আবৃত্ত্বি করছেন ওঁর বিখ্যাত 'বৃদ্ধা কৃষাণী ' কবিতাটি। ঝুমি আপা, লিটা ভাবী আর পারভীন আপা আজ একরকম শাড়ি পরে এসেছে। তিনজনের খুব খাতির। সবসময়ে একসাথে গান গায়। সবাই ওদেরকে বলে ত্রিমূর্তি সংঘ। হ্যাপি ভাবি আর শিমু আপু আইডেনটিক্যাল টুইন। একই সাথে অস্ট্রেলিয়ায় এসেছেন। একসাথে গান গায়।গলায় গলায় খাতির। বিবিসি বাংলা বিভাগের মূসা ভাই। অসম্ভব হ্যান্ডসাম আর হাসিখুশি মানুষ। উনি আসলে ঢাকায় না সিডনি থাকেন রুকু বুঝতে পারে না। ওই ঢাকা তো এই সিডনি। ওনার স্ত্রী অনুরীমা দত্ত ওপাড় বাংলার মানুষ। সুচিত্রা সেনের মত দেখতে। ছেলেকে পড়াতে এসে নিজেও বছরের ন'মাস সিডনিতে পড়ে থাকেন। বউ বাচ্চার টানেই উনি চলে আসেন সিডনি। এই মাঝারি সাইজের ক্যামেরা নিয়েই রুকু অস্থির! অথচ ওই মূসা ভাই ঘণ্টার পর ঘনটা বড় ক্যামেরাটা নিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেন। এতটুকু ক্লান্তি নেই। রুকু হাসে। ভাবে আসলে তিনি বোর্ণ জার্নালিস্ট। ক্যানবেরা থেকে এসেছেন কবি শাহাদ মান্নান। এই ক'মাস হোলো পলিটিকাল এসাইলাম হয়ে অস্ট্রেলিয়া এসেছেন। একটি নিষিদ্ধ ঘোষিত গ্রুপ তাকে হুমকি দিয়েছে। এই হুমকির যে যুগ শুরু হোলো এ থেকে পরিত্রাণের কোনো দিশা রুকু খুঁজে পায়না। ব্রিজবেন থেকে এসেছেন তবিবুল সাদেক চাচা। যার কাছে রুকুর প্রথম আরবী শিক্ষা। কি চমৎকার সুরে তেলাওয়াত করতেন, "ফাবিয়ায়ী আআলা ই রাব্বীকুমা তুকাজ্জিবান" রুকুর কানে এখনও সে সুর বাজে। পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করেন। মনে প্রাণে বাঙালি। কাপাসিয়া এলাকার লোক। বঙ্গ তাজের প্রচণ্ড ভক্ত! তাঁর কাছেই রুকু প্রথম শোনে বাংলাদেশের প্রথম প্রধান মন্ত্রী তাজউদ্দীন আহম্মদ একজন কোরানের হাফেজ ছিলেন। জিল্লুরও তবিবুল চাচা কে পছন্দ করে। রুকুকে বলে, "জানো রুকু, তবিবুল চাচাও আমার মত আবুজর গিফারীর (র) ভক্ত। যাকে বলা হয় অন্যতম আদি কম্যুনিস্ট"। রুকু বলে, "কম্যুনিজমের ভূত তোমার মাথা থেকে কবে বিদায় হবে? "
তবিবুল সাদেক চাচা পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধিতার বিপরীতে একটা ছোটখাটো বক্তৃতা দিতে গিয়ে ড: মহম্মদ শহীদুল্লাহ সাহেবের সেই অমর বাণীটি বললেন। "আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য, তার চেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙালি। এটি কোন আদর্শের কথা নয়; এটি একটি বাস্তব কথা। মা প্রকৃতি নিজের হাতে আমাদের চেহারায় ও ভাষায় বাঙালিত্বের এমন ছাপ মেরে দিয়েছেন যে মালা-তিলক-টিকিতে কিংবা টুপি-লুঙ্গি-দাড়িতে ঢাকার জো-টি নেই।" রুকু হাসে, তবিবুল চাচা ঠিক বই এর ভাষায় কথা বলেন। মেলার বিভিন্ন স্টলগুলির সাথে কিছু অভিনব স্টল যুক্ত করা হয়েছে এবার। রবীন্দ্র স্টল, নজরুল স্টল, হুমায়ূন স্টল ইত্যাদি আরও অনেক স্টল। রবীন্দ্র স্টলে মিতা ভাবী আর শিমুল দা রবীন্দ্রনাথের নায়ক নায়িকা সেজে বসে আছে। দেখতে দারুণ লাগছে!
কায়জার ভাই শুধু এদিক ওদিক ছুটাছুটি করছেন। পোস্টার টানানো, ভ্যাকুম ক্লিনিং ইত্যাদি সবচে কঠিন কায়িক শ্রমসাধ্য কাজগুলিই তিনি করছেন। বাড়িতেও তিনি সকল কাজের কাজী। একটি প্রোগ্রামে কায়জার ভাই এর মত অমায়িক কর্মী থাকলে অন্যেরা নিশ্চিন্তে আরাম করতে পারে। অথচ তার পাশাপাশি মাসুম, সিডনির প্রতিষ্ঠিত ইঞ্জিনিয়ার, বিল্ডিং ব্যবসায় ফুলে ফেঁপে বিশাল সম্পত্তির মালিক। কিন্তু বাড়িতে কিংবা বাইরে এক ফোঁটা কাজ করতে রাজি না। শুধু গান গাইবে আর কবিতা লিখে বেড়াবে। আর বউ বেচারা বাড়ির কাজ, বাচ্চাকে স্কুলে দেয়া, বাজার করা সব কাজই করছে। মাসুমের প্রতিবেশী কাইজার হওয়াতে একটু রক্ষা। কাইজার আর ওর স্ত্রী নাবিলা দুজনে মাসুমের স্ত্রী রেহানা কে অনেক হেল্প করে। এই বিদেশের বাজারে যেখানে কাজের লোক রাখা মানে নিজের বেতনের প্রায় অর্ধেক দিয়ে দিতে হয় সেখানে কাইজারের মত ক্লাসমেট প্রতিবেশী মেলাতে মাসুমের আর রেহানার জীবন অনেক বাংলাদেশময় হয়েছে। মাথার ভেতরে এই 'বাংলাদেশময়' শব্দটি রুকুর মস্তিস্কের কোষে কোষে অদ্ভুত অনুরণন তোলে! ছবি তুলতে তুলতে ক্লান্ত হয়ে রুকু ওদের কন্ট্রোল রুমের রেস্টিং কর্নারে একটু ন্যাপ নিচ্ছিল। সম্প্রতি বিবিসির একটি প্রতিবেদনে শুনেছিলো অফিসে কয়েক মিনিটের মাইক্রো স্লিপ কয়েক ঘণ্টার কাজের ইফিক্যাসি বাড়ায়। সেজন্য নাকি আজকাল মালিকেরা অফিসে কর্মচারীদের দু-পাঁচ মিনিট ক্ষুদ্র সময়ের জন্য নাসিকাগর্জন এর অনুমতি দিচ্ছেন। জিল্লুর পুরনো কমিউনিস্ট। হেসে বলে, "দেখেছ ঠিক যেন হুমায়ুনের নাটকের মালিক এরা! কি ভালো! তোমাকে একটা মজার গল্প বলি। যেটা আমি ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন করার সময় তাজুল ভাই আমাকে শুনিয়েছিলেন।"
পরের অংশ
|