bangla-sydney
bangla-sydney.com
News and views of Bangladeshi community in Australia












এই লিংক থেকে SolaimanLipi ডাউনলোড করে নিন



সাবধান
এম এস আরেফীন



সিম্বার মনটা আজ দুর্দান্ত রকমের ভাল, কারণ আজ সে বেশ মজার একটা জায়গায় যাচ্ছে। মোফাসা, সিম্বার বাবা অনেকদিন থেকেই সিম্বাকে সেই দারুণ জায়গায় নিয়ে যাবার কথা দিলেও সেটা হয়ে ওঠেনি। শেষমেশ গতকাল দুপুরে তার বাবা তাকে জানালো যে সিম্বা, তার মা আর তার বাবা এই তিনজন মিলে সেই মজার জায়গায় যাবে। সবেমাত্র সকাল, সারাদিন প্রচুর হাটাহাটি আছে, অথচ সিম্বা অনেক ক্লান্ত বোধ করছে কারণ এই জায়গায় যাবার উত্তেজনায় গতকাল সারারাত সে ঘুমাতে পারেনি।

সিম্বারা তিনজন ঠিক এই মুহূর্তে সেই অদ্ভুত জায়গার সামনে দাঁড়িয়ে। সিম্বার মাথার উপরে অনেক উঁচুতে একটা বড় সাইনবোর্ড যেখানে বড় বড় করে লেখা “সাবধান” আর তার দুপাশে মাথার খুলি আর হাড়ের চিহ্ন যুক্ত ডেঞ্জার সাইন। টিকেট কেটে সিম্বারা ভেতরে গেলো। এই জায়গাটা ভীষণ আজব তাই এখানে ঘোরাফেরা করার জন্যও কিছু আজব নিয়মকানুন আছে। তাই সেই নিয়ম কানুন গুলোর সাথে পরিচয় করে দেবার জন্য তাদের বিশ জনের একটা দলকে একটা কামড়ায় ঢুকিয়ে দেয়া হলো।

সেই কামড়ায় একজন ট্যুর গাইড এবং সে, তাদের দলের মাথা। ট্যুর গাইডেরও ব্যাপক প্রস্তুতি। তার মাথায় হেলমেট আর কোমরের চারিদিকে বিভিন্ন অস্ত্র এমনকি একটি পিস্তল ও আছে। প্রথমেই বিশ জনের সবাইকে হেলমেট পরিয়ে দেয়া হলো। তারপর নিয়ম কানুনের সাথে পরিচয়। ট্যুর গাইড রীতিমত বোর্ডে আকিঝুকি করে তাদেরকে নিয়ম শেখাচ্ছে। এত কড়াকড়ি নিয়ম কানুন হেলমেট অস্ত্র পিস্তল এই সব কিছু দেখে সিম্বার গা ছম ছম করে উঠলো। মনে মনে সে কিছুটা ভীত বোধ করছে। যা হোক ট্যুর গাইড তাদেরকে নিয়ম কানুনগুলোর সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে।

নিয়মকানুনঃ
১. বিশ জনকে সবসময় একসাথে ঘুরতে হবে কারণ এরা ভয়ানক প্রাণী যে কোন সময় হামলা করতে পারে তাই নিরাপত্তার জন্য আলাদা হওয়া যাবে না
২. এই প্রাণীদের কোন ভরসা নেই হাতের সামনে যা কিছু পায় সেটা ছুঁড়ে মারতে পারে তাই মাথার হেলমেট সব সময় পরে থাকতে হবে
৩. এদেরকে কোন খাবার বা পানি দেয়া যাবে না
৪. কোন কথা বলার চেষ্টা করা যাবে না কারণ তাদের কথার কোন ঠিকঠিকানা নেই আর তাদের বেশীরভাগ কথাই মিথ্যা
৫. তারা যা বলবে সব উপেক্ষা করতে হবে কারণ শুনলে নিশ্চিত বিপদ
৬. তাদের দিকে তাকিয়ে হাসা যাবেনা কারণ এরা হাসির বিভিন্ন মানে করে থাকে
৭. এদের মধ্যে কাউকে খাঁচায় রাখা হয়েছে সেসবদের কাছ থেকে অনেক অনেক সাবধান ও দূরে থাকতে হবে
৮. এদের কাউকে খোলা বড় জায়গায় রাখা হয়েছে যেখানে পাচিল উঁচু করে দেয়া হয়েছে যেন এরা পালাতে না পারে অতএব সেইসব স্পটে বেশী নিচু হওয়া যাবে না
৯. কোন ছবি বা ভিডিও করা যাবে না
১০. খুব কাছে যাওয়া যাবে না কারণ এরা কামড় দিতে পারে
১১. যদিও এরা দুনিয়ার সেরা জীব তবে এরা প্রায় বিলুপ্তির পথে। এখানে যে কয়টা আছে এরাই শেষ বংশধর

এরপর ট্যুর গাইড সিম্বার ২০ জনের দলকে আরো কিছু তথ্য দিলেন, যেমন ইভেকুয়েশন প্ল্যান, বিপদে পড়লে কার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করবে, বিশ্রামস্থান ও টয়লেটের অবস্থান, কিভাবে কোনদিক দিয়ে ট্যুর আগে বাড়বে এবং কোথায় এসে শেষ হবে ইত্যাদি ইত্যাদি।

ঠিক এই মুহূর্তে সিম্বা খুব উত্তেজিত কারণ একটু পরেই দরজা খুলে তাদের বিশ জনের দলকে “সাবধান” এর ভেতর ঢুকিয়ে দেয়া হবে। সিম্বা, মোফাসা আর তার মা ঘুরছে সাথে বিশ জনের দল। আর ট্যুর গাইড কথা বলে যাচ্ছে আর পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে।

মানব ভুবন “সাবধানে” আপনাদের স্বাগতম। আসুন আমরা আপনাদেরকে দুনিয়ার সর্বোৎকৃষ্ট সৃষ্টি মানুষদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেই। এদের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো এরা দেখতে একইরকম শুধু গায়ের বর্ণে ভিন্নতা আছে কিন্তু আসলে এদের ভেতরে বা অন্তরে ভিন্নতা অনেক বেশী। চলুন আমরা ট্যুর শুরু করি।

ঐ যে ফরসা প্রকৃতির মানুষ যেটা খোলা মাঠে ঘুরাফিরা করছে এদেরকে ককেশিয়ান মানব জাত বলা হয়ে থাকে। সাধারণত পশ্চিমা দেশগুলোতে এদের বেশী দেখা যেত। এদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে শুধুমাত্র গায়ের রঙ ফরসা হবার কারণে এরা দুনিয়ার আর সব মানুষকে নিকৃষ্ট মনে করতো এবং তাদের উপর অত্যাচার চালাতো। এরা প্রচণ্ড বর্নবাদি। ফরসা ছাড়া অন্য কোন রঙ বা প্রজাতির মানুষ উন্নতি সাধন করুক এটা তারা কখনোই মানতে পারে না। দুনিয়ার ইতিহাসে এমন প্রচুর নজির এরা রেখেছে যেখানে তারা অন্য রঙের মানুষদের উপর বছরের পর বছর অত্যাচার করেছে। এমনকি শুধু গায়ের বর্ণ কালো হবার কারণে সেই জাতের মানুষদেরকে মেরেও ফেলেছে। এমনকি কোন কোন মহাদেশ বা উপমহাদেশের সার্বভৌমত্ব এরা কেড়ে নিয়েছে আর বছরের পর বছর জোর করে তাদের উপর অত্যাচার চালিয়েছে।

আসুন পরেরটায় যাই, এই যে এরা হলো কৃষ্ণাঙ্গ বা নিগ্রো। সাধারণত আফ্রিকান দেশগুলোতে এদের বেশী দেখা যায়। এরা হচ্ছে সেই জাতের মানুষ যারা সাদাদের সব অত্যাচার সহ্য করেছে। এরা দাস হিসেবে অনেক অনেক বছর সাদাদের আনুগত্য করেছে । তবে এদের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে গায়ে গতরে এরা খুব শক্তিশালী হয়ে থাকে।

আসুন এই যে এরা হলো মঙ্গোলিয়ান এদেরকে সাধারণত এশিয়ান দেশগুলোতে বেশী দেখা যায়। এদের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এরা অর্থ ছাড়া আর কোন কিছুকেই প্রাধান্য দেয় না। জন্ম থেকেই এদের মাথায় ঢুকিয়ে দেয়া হয় ছলে বলে কৌশলে যে ভাবেই হোক বাড়ি গাড়ি সহায় সম্পদ গড়তে হবে। তাই মানুষকে ঠকিয়ে মেরে কেটে যে ভাবে সম্ভব এরা সহায় সম্পদ গড়ে থাকে।

মানব প্রজাতি সাধারণত এই তিন ধরনের। তবে সংকর জাতও আছে যেমন ল্যাটিন আমেরিকানরা আর ইন্ডিয়ানরা। এরা হচ্ছে এশিয়ান আর নিগ্রোর সংকর। আমরা পরে ঐদিকে ইন্ডিয়ান আর ল্যাটিন আমেরিকান প্রজাতি দেখতে যাবো। এই বেসিক চার পাঁচ ধরনের পরে এখন আমরা আপনাদেরকে কিছু ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের মানুষ দেখাবো। তবে “সাবধান”। নিয়মগুলো কোন ভাবেই ভঙ্গ করা যাবে না।

আসুন এই যে এই মানবটা দেখছেন খাঁচার ভেতর সে তার জীবদ্দশায় মোট ২১ টা খুন করেছে। আর যাদেরকে খুন করেছে তারা আর অন্য কোন প্রাণী নয়। তারাও মানুষই ছিলো। একমাত্র মানুষের মাথায়ই এই বুদ্ধি আসা সম্ভব যে তারা তাদের নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য অন্য মানুষকে খুন করতে পারে। আমাদের পশু রাজ্যে আমরা ভক্ষণের জন্য অন্য প্রাণী মেরে থাকি কিন্তু ভক্ষণ তো নয়ই এমনকি নিজের স্বার্থ রক্ষার জন্য নিজেরই জাতের পশুকে আমরা কখনোই মারি না।

আসুন, আর ইনি তার চাকরিজীবনে সবসময় ঘুষ খেয়েই গেছেন তাই উনার ভুঁড়িটাও অনেক মোটা। অন্যদের কথা কখনো কোনদিনও তার মাথায় আসেনি। সে শুধুই নিজের লাভ কোথায় সেটা ভেবেছে। আর সুযোগ মত শুধু ঘুষ খেয়েই গেছে আর সাধারণ জনগণকে ঠকিয়েছে। আর যাদেরকে ঠকিয়েছে তারাও মানুষই ছিল।

এবার এদিকে আসুন, এই মানুষটি তার স্কুলের ছাত্রীদেরকে ধর্ষণ করতো। আমরা নিচু জাতের প্রাণী তাই আমাদের জ্ঞানও কম। তাই হয়তো আমরা একই সময় অনেক নারী পশুর সাথে সহবাস করি কিন্তু সেটা তখনই হয় যখন স্ত্রী পশু আমাদেরকে বিভিন্ন ডাকের বা গন্ধের মাধ্যমে আকৃষ্ট করে। অথচ এরা সর্বোৎকৃষ্ট প্রাণী কিন্তু এরা অন্য মেয়েদের অনুমতি নেবার প্রয়োজন তো বোধ করেই না বরং তাদের কে জোর করে ধর্ষণ করে থাকে। তাও একটা দুটা নয় একাধিক বার। এদের মধ্যে আবার কিছু মানুষ আছে, যারা মনে করে থাকে স্ত্রী মানেই ভোগের সামগ্রী তাই স্ত্রীর অনুমতি তো দূরে থাক তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তারা জোর করে তাদেরকে ব্যাবহার করে থাকে যা কিনা ধর্ষণেরই শামিল।

এই সেলে আছে চোর জাতের মানুষ। যাদের পেশা ছিলো অন্যদের জিনিষ চুরি করা। এদের জীবিকা নির্বাহ হতো অন্যের জিনিষ চুরি করে। আর এরা যার ঘরে চুরি করতো সেটা আর কেউ না সেও অন্য কোন মানুষ। আর এই এদের কারণেই মানুষজন নিজেদের সব কিছু খুব হেফাজতে রাখতো, ঘর জানালা দরজা বন্ধ করে, পারলে লক করে রাখতো। ভ্রমণে গেলে বাক্স পেটরা তালা দিয়ে রাখতো। অথচ আমরা প্রাণীকুল বনে বাদারে খোলা প্রান্তরে থাকি, আমাদের থাকার ডেরা, নীড় বা গুহা থাকলেও সেখানে দরজা জানালা বন্ধ করার কিংবা তালা দেবার কোন প্রয়োজন নেই কারণ আমরা একজন আরেকজনের ঘরে চুরি করি না।

আসুন ঐখানটায় যাই। এখন যে স্পটে যাচ্ছি, সেখানে বিভিন্ন পেশার মানুষ দেখতে পাবেন। কেউ ডাক্তার কেউ ইঞ্জিনিয়ার কেউ উকিল কেউ ব্যবসায়ী। কিন্তু এরা সবাই নিজেদের পেশাকে টাকা কামানোর নেশা বানিয়েছে। তাই ডাক্তারেরা হয়তো ইচ্ছা করেই মৃত মানুষকে আই সি ইউতে রেখে বা রোগীকে ইচ্ছা করে ক্লিনিকে আটকে রেখে বড় বড় বিল বানিয়েছে। ইঞ্জিনিয়াররা হয়তো রাস্তা ঘাট বিল্ডিং বানাতে গিয়ে ভেজাল মালামাল ব্যবহার করেছে, উকিল হয়তো নকল সাক্ষী বানিয়ে কেইস জিতেছে আবার ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্যে হয় ভেজাল দিয়েছে বা ওজনে কম বেশ করেছে। মদ্দাকথা হলো, নিজেদের লাভের জন্য তারা যাদের সাথে প্রতারণা করেছে তারাও মানব প্রজাতি বৈ আর অন্য কোন জাত নয়।

এবার আসুন এখানে, এই এলাকায় যারা থাকে তারা মানব প্রজাতির মধ্যে নিকৃষ্টতর। এদের কাজ যদিও ছিলো আইন ও শাসন রক্ষণাবেক্ষণ কিন্তু আদতে তারা যা করেছে তা হচ্ছে আইন ও তার অনুশাসন ভঙ্গ ও জনসাধারণের মালামাল ভক্ষণ। এরা নিজেদের আখের গুছানোর জন্য নির্দোষকে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে আর বড় বড় দাগী আসামী খুনি ধর্ষকদেরকে তাদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। এবং সর্বোপরি তারা যার ক্ষতি করেছে সে আর কেউ নয়, তারাও মানুষ।

আগে বলেছি যে পুলিশরা ছিলো নিকৃষ্টতর, এবার দেখুন এদেরকে, এরা হচ্ছে মানব সমাজের সবচেয়ে নিকৃষ্টতম। কারণ অন্যান্য মানুষেরা যাদের ক্ষতি করেছে সেটা ব্যক্তিগত পর্যায়ে বা সামাজিক পর্যায়ে, আর এরা পুরো একটি দেশ, দেশের জনগণ তথা সর্বসাধারণ মানুষের ক্ষতি করেছে। আর এরা হচ্ছে মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী ও নেতারা। শুধুমাত্র নিজেদের লাভের জন্য এরা হেন কোন কাজ নেই যে করেনি। এতক্ষণ যেসব চোর খুনি ধর্ষক বাটপার প্রতারক দেখলেন এই সব কাজই এরা করেছে শুধু মাত্র তাদের গদিটা ঠিক রাখার জন্য। কারণ গদিতে থাকা মানেই নিজ-সেবা, জনসেবা নয়। আর সর্বসাধারণকে ঠকিয়ে এরা নিজেদের সাম্রাজ্য গড়েছে।

আসুন এবার আপনাদেরকে একটা বেশ মজার জায়গায় নিয়ে যাব। এই দেখুন এটা হচ্ছে এদের শেষ আবাসস্থল। এরা দেখতে শুনতে গড়নে একরকম হলেও এদের আবার ভিন্ন ভিন্ন ধর্ম আছে। সারা জীবন বিভিন্ন অপকর্ম করেও জীবন শেষে এদেরকে এদের ধর্ম বিশ্বাস অনুযায়ী হয় কবর দেয়া হয়, বা পোড়ানো হয় অথবা বাক্সবন্দী করে রাখা হয় তাও আবার যথাযথ সম্মানের সাথে। অথচ আমরা পশুরা, না খুন করি, না রাহাজানি, না চুরি বা ডাকাতি, ধর্ষণ শোষণ অত্যাচার কিছুই করিনা, অন্তত নিজের জাতের পশুর সাথে করিনা, তাও আমরা মরে গেলে আমাদের না দেয়া হয় সম্মান না কবর না হয় পোড়ানো। আমাদের মৃতদেহ বনের মাটিতেই কোথাও পড়ে থাকে আর হয়তো অন্য পশুরা সেটা খেয়ে শেষ করে। সারাজীবন এত ভাল থেকেও আমাদের কি নিষ্ঠুর পরিণতি আর সারাজীবন খারাপ কাজ করেও মৃত্যুর পরে তাদের কত সম্মান কত সুন্দর পরিণতি কারণ তারা নামে মাত্রই “জীবের সেরা জীব”। আপনাদেরকে আগেই বলেছি মানব সম্প্রদায় প্রায় বিলুপ্তির পথে। এখানে আজ যাদেরকে দেখলেন এরাই এদের শেষ বংশধর। এরা মারা গেলে, এদেরকেও এইখানেই তাদের ধর্ম বিশ্বাস অনুযায়ী শেষকৃত্য করা হবে।

সিম্বারা বাসায় ফিরে যাচ্ছে। ট্যুর শেষ। সারাদিন অনেক হাটাহাটি হয়েছে। সিম্বা অনেক অনেক ক্লান্ত। কিন্তু তার মাথা কোনভাবেই শান্ত হচ্ছে না। হাজারো প্রশ্ন তার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে এই মানব জাতিকে নিয়ে।

সিম্বার চিন্তাধারায় চির ধরালো মোফাসা।
- সিম্বা, কেমন দেখলে?
- কি?
- “সাবধান”
- সত্যি বলবো?
- বলো, সত্যিই তো বলবে, তুমিতো আর মানুষ নও যে মিথ্যা বলবে।
- মন খুব খারাপ হয়ে গেছে
- কেন?
- কোনভাবেই হিসাব মিলছে না
- কিসের হিসাব, সিম্বা
- আচ্ছা বাবা, আমরা সব পশুরা বনেই থাকি, আমাদের সব পশুদের একটাই রাজ্য, আর সেটা হচ্ছে বন। আর আমাদের এই বনে কত নানা প্রজাতির পশু পাখি। আর আমরা দেখতেও একজন আরেকজনের থেকে ভিন্ন। কিন্তু মানব প্রজাতির সবাই দেখতে একইরকম, শুধু গায়ের রঙ ভিন্ন আর আকৃতিতে কেউ বড় কেউ ছোট। আমরা পশুরা একজন আরেকজন থেকে ভিন্ন হওয়া সত্ত্বেও আমরা সবাইকে নিয়েই একসাথে বনে থাকি। আমাদের মাঝে কোন সমস্যা নেই। অথচ মানব সমাজে কেন এত বিশৃঙ্খলা।
- সিম্বা শোন, মানব সমাজে বিশৃঙ্খলার মূল কারণ লোভ, লালসা, হিংসা, ঈর্ষা আর বিদ্বেষ। মানবেরা যেমন সৃষ্টির সেরা তেমনি তাদের ভেতরে আছে তাদের রিপু, তাদের খারাপ গুনাগুণ। আর তার চেয়েও বড় সমস্যা, সেই খারাপ গুনগুলোকে সংবরণ বা নিয়ন্ত্রণ করতে পারার ইচ্ছাটা তাদের ছিলনা।
- আচ্ছা, আরেকটা প্রশ্ন
- বলো সিম্বা
- তারা যদি সৃষ্টির সেরা জীবই হবে তাহলে তারা বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে কেন?
- তুমি কি সেই ট্যুর গাইডের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছো?
- হ্যাঁ, শুনেছি
- তাহলে মনে করে দেখ, ট্যুর গাইড একটা কথা বার বার বলেছে। এরা মানুষ হয়েও খুন রাহাজানি চুরি ডাকাতি ধর্ষণ প্রতারণা যেটাই করেছে সেটা অন্য একটা মানুষের উপরই করেছে। আর তাই সোজা সমীকরণের হিসেবে ধীরে ধীরে এরা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। যেমন আমরা সিংহ জাতের প্রাণী, আমরা যদি আমাদের নিজেদের অর্থাৎ সিংহদেরকে একে একে মারতে শুরু করি তাহলে কোন না কোন একদিন আমাদের সিংহ প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাবে। ঠিক তেমনি এরা মানুষেরা যেহেতু সব অত্যাচার অনাচার চালিয়েছে অন্য মানুষদের উপর তাই ধীরে ধীরে এরা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তবে প্রশ্ন সেটা নয়।
আসল প্রশ্ন হচ্ছে -

এরা কি আসলেই সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব নাকি সৃষ্টির নিকৃষ্টতম জীব?




এম এস আরেফীন, সিডনি, অস্ট্রেলিয়া




Share on Facebook               Home Page             Published on: 26-Sep-2019

Coming Events:
বৃষ্টির সম্ভাবনার কারণে মেলার তারিখ ১ দিন পিছিয়ে ২১ এপ্রিল ২০২৪ (রবিবার) করা হয়েছে......




A day full of activities, games and fun.







Lakemba Blacktown Mascot
Minto Money raised so far





Lakemba Blacktown Mascot
Minto Money raised so far



Blacktown Lakemba Mascot
Minto Money raised so far







Blacktown Lakemba Mascot
Minto Money raised so far