মূলমন্ত্র না ভুলমন্ত্র এম এস আরেফীন
 কারণঃ
সোহানের বয়স চার। সে টিভি দেখছে আর তার নানী তাকে খাইয়ে দিচ্ছে। টিভিতে এখন সোহানের সবচেয়ে প্রিয় কার্টুনটা হচ্ছে। তার সমস্ত মনোযোগ কার্টুনে। মাত্র কয়েক লোকমা খাবার সে খেয়েছে। তবে এই লোকমা মুখে নিয়ে সে বসে আছে কারণ কার্টুনে এখন খুব মজার দৃশ্য চলছে। নানী বলছেন, “কি হলো খা।” সোহানের সেখানে ভ্রুক্ষেপ নেই। নানী আবারো বললেন খা। তাও সে চাবায় না। এরপর নানী চটাস করে ওর গালে একটা চড় বসালেন। তার গালের শোভা হলো পাঁচটা আঙ্গুলের দাগ আর চোখের অলংকার হয়ে গেল পানি। ঐদিনের পর থেকে সোহান সুন্দর মতো খায়। পনেরো মিনিটের মধ্যেই তার খাওয়া শেষ হয়ে যায়।
ঠিক এই মুহূর্তে সোহান তার জীবনের সবচেয়ে বিরক্তিকর কাজটি করছে। আলিফ, বা, তা, সা পড়তে তার একদম ভাল লাগে না। এই হুজুর আসেন আজকে একমাস হলো। সপ্তাহে একদিন করে তিনি আসেন। তবে হুজুর একা আসেন না। সাথে আসে এক বেত। আজ চতুর্থ ক্লাস। সোহান এখনো আলিফ, বা, তা, সা মুখস্থ করতে পারেনি। হুজুর বললেন আজ একমাস হয়ে গেলো এবারতো মুখস্থ পারার কথা, বলো মুখস্থ বলো।
- আলিফ, বা, তা, সা উমমম.....উমম - কি হলো চার সপ্তাহ হয়ে গেল এখনো মুখস্থ হয়নি।
বলেই বেত দিয়ে সপাং সপাং কয়েকটা বারি সোহানের হাতে। পরের সপ্তাহে সোহান গরগর করে আলিফ থেকে শুরু করে ইয়া হামযা পর্যন্ত একটানে বলে গেছে।
সোহান এখন ক্লাস থ্রি তে পড়ে। আজ রেজাল্ট দিয়েছে। গনিতে তার অর্জন ৫৪। বাসায় আসার পরে মা জেরা শুরু করলেন। জেরার বিষয়ঃ গনিতে কম মার্ক। সোহানের মা একটার পর একটা প্রশ্ন করে যাচ্ছেন কিন্তু ছেলেকে উত্তর দেবার কোন সুযোগই দিলেন না। হঠাৎ তিনি চিৎকার দিয়ে বললেন “কি হলো কথার উত্তর দিচ্ছনা কেন?” বলেই সোহানের মা তাকে আচ্ছা মতো পেটালো। এরপরে সোহান গনিতে আর কোনদিনও ৯৮ পায়নি। সবসময় ৯৯ ই পেয়েছে।
সোহানের বয়স এখন ১০। আজকে পাড়ায় ক্রিকেট খেলতে গিয়ে একটা উইকেট পড়া নিয়ে প্রতিপক্ষের একটি ছেলের সাথে তার দ্বন্দ্ব বাধে। কথা কাটাকাটি হতে হতে কিছুটা হাতাহাতিও হয়। সন্ধ্যায় সেই ছেলের বাবা এসে সোহানের বাবার কাছে নালিশ করলেন। নালিশ শুনেই ওর বাবা ওকে যার পর নাই মার মারলেন। সোহানের পক্ষের গল্প শোনাতো দুরের কথা তাকে কোন কিছু বলার সুযোগই দেয়া হলো না। যিনি নালিশ করেছেন তিনি কি সত্যি বলছেন কি না? বা সোহান আসলেও আজ ক্রিকেট খেলতে গেছে কি না সেসব কোন কিছুই তাকে জিজ্ঞেস করা হলোনা। ধুম ধুম বেধড়ক মার। এর পর থেকে পাড়ায় কোন ছেলের সাথে সোহানের কোনদিন আর লাগেনি।
বারো বছর বয়সটা খারাপ না। দশ, এগারো, বারো বছর বয়সে যার প্রতি প্রেম জন্মায় তার নাম গান। সোহান ইদানীং গান শুনে বড় ভাই এর সিডি প্লেয়ারে যখন সে ইউনিভার্সিটিতে থাকে। একদিন সোহানের হাত থেকে একটা সিডি পড়ে গিয়ে স্ক্র্যাচ খায়। সেই সিডি আর চলে না। সেদিন বিকেলে বাসায় এসে স্ক্র্যাচ খাওয়া সিডি দেখে তার ভাই তাকে উত্তম মধ্যম দিলেন। তারপর থেকে ভাই এর ঘরে গিয়ে সে আর সিডি শুনেনা।
সোহান এখন ক্লাস এইটে। সব সাবজেক্টেই ভাল তবে ইংরেজিতে সোহানের খুব ভয়। তার কারণ স্কুলের ইংরেজি স্যার, স্যার নন তিনি একজন ত্রাস। পড়া না পারলেই জোরে চিমটি। প্রতিদিন কোন না কোন ছাত্রের কপাল পোড়ে। এই স্কুলে উনার চিমটির কথা সবারই জানা। আজকে ক্লাসে ঢুকেই স্যার সবার আগেই সোহানকে পড়া ধরলেন। সোহান পারলোনা। সুতরাং স্যার তাকে সেই রাম চিমটি দিলেন। চিমটিটা এতোই জোরে মেরেছেন যে চামড়ায় নীল দাগ পড়ে গেছে। এর পর থেকে আর কোনোদিন ইংরেজির ক্লাসে তার পড়া ভুল হয়নি।
ঠিক সেইদিনই বাসায় এসে হাউস টিউটরের কাছে বিজ্ঞান না পারার কারণে আবারও সে মার খেলো। তারপর থেকে বিজ্ঞানে তার সব সময় হাইয়েষ্ট মার্ক।
সোহান এখন ঢাকা কলেজে পড়ে। প্রথম বর্ষ। ক্যান্টিনে বসে আছে। দ্বিতীয় বর্ষের এক বড় ভাই ওকে ডেকে টাকা দিয়ে বললো “এই সোহান আমার জন্য একটা বেনসন লাইট সিগারেট নিয়ে আয়তো”। সোহান সিগারেট খায়না তাই সে জানেনা কোনটা কি। সে কড়া একটা বেনসন গোল্ড নিয়ে সেই বড় ভাই এর হাতে দিলো। সেই সিগারেট দেখেই সোহানের কানের নীচে জোড়ে এক চড় দিলো সেই বড় ভাই।
ফলাফলঃ
সোহান এখন ইউনিভার্সিটি প্রথম বর্ষে পড়ে। নীলক্ষেতে একটা চায়ের দোকানে বন্ধুরা বসে আড্ডা দিচ্ছে। চায়ের অর্ডার দেয়া হয়ে গেছে। এই স্টলের মামা তার চায়ের কনফিগারেশন জানেন। কতটুকু চা কি পরিমাণ চিনি আর কয় চামচ দুধ সব কিছুই। রহমত হচ্ছে স্টলের টি বয়। সে চা নিয়ে এসেছে। চায়ে চুমুক দিয়েই সোহান বুঝলো ভুল করে অন্য কারো চা রহমত তাকে দিয়ে দিয়েছে। রহমত কে কাছে ডেকেই জোরে এক চড় বসালো তার গালে। এর পর থেকে আর কোনদিন রহমত অন্য কারো চা ভুলে করে সোহানকে দেয়নি।
পরের মাসে একদিন রিকশা করে সোহান ইউনিভার্সিটি এলো। রিকশা থেকে নেমে ভাড়া মিটিয়ে হাটতে যাবে। রিকশা ওয়ালা বললেন “স্যার দশটা টাকা বেশী দেন ঘুইরা আইলাম জামের লাইগ্যা।” এটা নিয়ে সোহানের সাথে রিকশাওয়ালার তর্ক লেগে গেলো। তর্ক থামছে না। সেটা ঝগড়ায় রূপ নিলো। সোহান হঠাৎ করেই রিকশা ওয়ালার গালে চড় বসিয়ে দিলো। তার থেকে বয়সে বড় রিকশাওয়ালা কথা না বাড়িয়ে চোখ মুছতে মুছতে বিদায় নিলো।
সেদিন রাতে বাসায় এসে তার মেজাজ খুব খারাপ হলো। কারণ বাসার কাজের ছেলে রমজান জানে সোহান তার নিজের ঘরটা সব সময় গোছগাছ দেখতে পছন্দ করে। আর এই গোছানোর দায়িত্ব রমজানের। কিন্তু রমজান আজকে ঘরটা গুছায়নি। সে যেভাবে রেখে সকালে বাইরে গিয়েছিলো ঠিক সেই ভাবেই আছে। সে রমজানকে ডাকলো। ডেকেই বলল “কি রে ঘর গোছাসনি কেন?” রমজান কিছু বলার আগেই তার গালে একটা চড়। এর পর আর কোনদিন সে সেই ঘর অগোছালো পায়নি।
আজ সোহানের মন খুব খারাপ। অফিস থেকে বাসায় এসে সুপ্রিয়ার সাথে একটা সামান্য বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি। সেখান থেকে ঝগড়া। ঝগড়া থামছিলোনা। শেষমেশ নিজেকে কন্ট্রোল না করতে পেরে সে সুপ্রিয়ার গায়ে হাত উঠালো৷ তার এক ঘণ্টার মধ্যে সুপ্রিয়া তার ব্যাগ ট্যাগ গুছিয়ে সাথে তাদের তিন মাসের মেয়ে অবন্তীকে নিয়ে চলে যায় তার বাবার বাসায়। আর তখন থেকেই সোহানের মনটা ভয়ানক খারাপ।
তার এই জীবনে শিশু কাল, তারপর কিশোর কাল ও তরুণ কালে তার চারপাশের অবস্থিত বয়সে বড় সম্মানে ও মর্যাদায় বড় অথবা শক্তিতে বড় প্রতিটি মানুষের কাছ থেকে মার খেয়ে বেড়ে উঠতে উঠতে মার খাওয়া এবং মার দেওয়া এই দুটো বিষয়ই তার কাছে খুব সহজ হয়ে গেছে। আর সবাই যেমন সহজ অথবা কঠিন যে কোন বিষয়ের একটা সহজ সমাধান টানে মারের মাধ্যমে। আর এর মধ্যে দিয়ে বেড়ে উঠতে উঠতে সোহানও শিখে গিয়েছে সব কিছুর একটাই সমাধান আর তা হচ্ছে মার দেওয়া। তাই কাজের ছেলে, হোটেল বয়, রিকশাওয়ালা এমনকি নিজের স্ত্রীর সাথেও যে কোন সমস্যার সমাধানের তার একমাত্র হাতিয়ার হয়ে উঠলো মার দেয়া।
হতে পারে তার নানী, মা, বাবা, বড় ভাই, আরবি টিচার, স্কুলের শিক্ষক, কলেজের বড় ভাই, তারা সবাই মার খেয়েই বড় হয়েছে। কিন্তু তাদের মাঝে কেউই এই শিক্ষাটা অর্জন করেনি অথবা তাদের মাঝে এই বোধটুকু জন্মেনি যে মেরে কোন কিছুই অর্জন করা যায় না। তারা কেউই অন্যভাবে ভাবেনি বা ব্যতিক্রম হতে পারেনি। তারাও একই ভাবে ভেবেছে, আর সেটা হচ্ছে “আমি যেহেতু মার খেয়েছি তাই আমিও মার দেবো।” তাদের সবারই একই টিপিক্যাল মেন্টালিটি “মাইরের উপর ঔষধ নাই।” আজ সোহানের জীবনের এই ক্লেশ ঘন সন্ধ্যায় সোহান প্রতিজ্ঞা করলো সে, তার মা, বাবা, ভাই, অথবা শিক্ষক এবং সমাজের আর অন্য আট দশটা মানুষের মত হবে না। সে জীবনে আর কোনদিন কাউকে মারবে না কারো গায়ে হাত তুলবে না। সে তার মেয়ে অবন্তীকে মারবে না। আর সবার মতো সকল সমস্যার সমাধান মারের মধ্যে খুঁজবে না। সে হবে আর সবার থেকে ভিন্ন। সে সবাইকে ধীরে সুস্থে ভালোবাসা দিয়ে বুঝাবে। আর সবার মত মারের মূলমন্ত্রে সে সকল সমস্যার সমাধান করবে না।
উপরের গল্পটি গল্প নয় বরং আমাদের বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরের একটি বাস্তব চিত্র। বাংলাদেশে পেলে বেড়ে ওঠা কোন ছেলে বা মেয়ে মার খায়নি এই রকম ছেলে মেয়ের সংখ্যা হাতে গোনা। বরং পুরো সমাজের সবারই মানসিকতা হচ্ছে মার দিতে হবে কারণ “মাইরের উপর ঔষধ নাই।” আর এটাই হচ্ছে আমাদের থেকে বয়সে সম্মানে মর্যাদায় ও শক্তিতে যারা বড় তাদের মানুষ ঠিক করার মূলমন্ত্র।
আসলে নানী হিসেবে নাতিকে, মা বাবা হিসেবে সন্তানকে, বড় ভাই হিসেবে ছোট ভাইকে, শিক্ষক হিসেবে ছাত্রকে মেরে কি করতে পেরেছি আমরা। দেশ দশের উন্নতি করতে পেরেছি, না পারিনি বরং অবনতি হয়েছে। দেশকে খুব এগিয়ে নিয়ে গিয়েছি, না যাইনি বরং দিন দিন বর্বর যুগের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। দেশে অপরাধ কমেছে, না বরং বেড়েছে।
না খেতে চাইলে মার, অংক না পারলে মার, দুষ্টুমি করলে মার, ইংরেজি না পারলে মার, সিডিতে স্ক্রাচ পড়লে মার, ভুল ব্রান্ডের সিগারেট আনলে মার। পাঁচ ছয় সাত বছর বয়স কাল থেকে একটি মানুষ বা সত্তা যখন তার ১৭ বা ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত শিক্ষা গ্রহণের ও বিকশিত হবার এই গুরুত্বপূর্ণ সময়টাতে সমাজের সকল স্তরের এবং তার চারপাশের সকল মানুষের কাছ থেকে মার খেয়ে খেয়ে বড় হয় তখন মার খাওয়া ও দেওয়া বিষয়টা তার কাছে সহজ হয়ে ওঠে। আর তাই অন্য সবার মত সেও সেই একই সমীকরণ খাটিয়ে মার দিয়ে সকল সমস্যার সমাধান করতে চায়। আর সেই কারণেই আমাদের দেশে সওয়ারী পেটাচ্ছে রিকশা ওয়ালাকে, মালিক পেটাচ্ছে চাকর কে, কাষ্টমার পেটাচ্ছে হোটেল বয় কে, বড়লোক পেটাচ্ছে ভিখারিকে, গাড়ির যাত্রী পেটাচ্ছে হকারকে, শিক্ষক ছাত্রকে আর বীরপুরুষ জামাই পেটাচ্ছে তার বউকে।
রাস্তা ঘাটে পথে পাঁচালিতে অলিতে গলিতে ঘরে বাইরে মার খেতে খেতে মার দেখতে দেখতে আমরা সবাই মার দেবার অভ্যাসটা খুব দ্রুত রপ্ত করে ফেলি। অথচ আমাদের মগজ খাটিয়ে কেউ ভাবছি না, মার দিয়ে কি অর্জন করেছি আমরা?
উত্তরঃ
অর্জন করেছিঃ পিটিয়ে বউকে মেরে ফেলছি পিটিয়ে ছাত্র মেরে ফেলছি পিটিয়ে কাজের লোককে মেরে ফেলছি
আজকাল ইউটিউব ইন্সটাগ্রাম ফেসবুকে মাঝে মাঝেই শিক্ষক পেটাচ্ছে ছাত্র, জামাই পেটাচ্ছে বউ, মালিক পেটাচ্ছে চাকর, এই ধরনের ভিডিও ভাইরাল হয়। এইসব মার যখন কারো মৃত্যু বয়ে আনে তখন দেশ ও দশ আর তার সাথে জনগণ হয়ে উঠে গরম। খুব হৈ চৈ চলে এক দু দিন বা বেশী হলে সপ্তাহ। মিটিং মিছিল মানব বন্ধন হয়। হয় সভা সেমিনার। চাওয়া হয় বিচার। কিন্তু কেউ যে জিনিষটা চায়না সেটা হচ্ছে কারণ খতিয়ে দেখা। পিটিয়ে মেরে ফেলার মত একটি ফলাফলের কারণ কি হতে পারে? কারণ হচ্ছে আমাদের দেশে প্রতিদিন সোহানেরা, রহমতেরা, রমজানেরা প্রতিনিয়ত মার খাচ্ছে। আর আজকে যে মার খাচ্ছে সে কাল আবার অন্য কাউকে মার দিচ্ছে। আগামীকাল যে মার খাচ্ছে পরশু সে অন্য আরেকজনকে মার দিচ্ছে। এই ভাবেই চলতে থাকছে মার খেয়ে মার দেবার চেইন রিয়েকশন। নিজে মার খেয়ে অন্যকে মার দেবার ভুলমন্ত্র। এই সাইকেলটা আমাদের দেশে চলে আসছে বহুযুগ ধরে। এবং সবচেয়ে কষ্ট এবং দুঃখের বিষয় হচ্ছে কেউই এমনকি আমাদের শিক্ষিত সমাজের মানুষেরাও এই সাইকেলটা বা চেইন রিয়েকশনটা ভাংছেন না বা এটা থেকে বেরিয়ে আসছেন না।
আসুন সাধারণ জ্ঞান কাজে লাগাই। মার দেয়া জন্ম দিচ্ছে আরেকজন মার প্রয়োগকারীকে এতে কোন সন্দেহ নেই। আর বিগত ৪৮ বছরে “মাইরের উপর ঔষধ নাই” এই মূলমন্ত্র আমাদের দেশে কোন উন্নয়ন বয়ে আনেনি বরং জন্ম দিয়েছে সহিংসতা অত্যাচার নিপীড়ন আর জিঘাংসা। অতএব এই মূলমন্ত্রটা আসলে একটি ভুলমন্ত্র সেটা প্রমাণিত।
সুতরাং এই ভুলমন্ত্র ত্যাগ করে আমরা সবাই সোহানের মত হয়ে যাই; তার মত প্রতিজ্ঞা করি “আমি মার খেয়ে থাকলেও কাউকে মারবো না।” কারণ আমি অন্য একজনকে না মারলে সে পরের দিন অন্য আরেকজনকে মারবে না। এবং এভাবেই ভেঙ্গে দিতে পারি আমরা এই চেইন রিয়্যাকশন, এই সাইকেল।
আমরা বরং আরো ভালোবাসতে শিখি। ভালোবাসা দিয়ে বুঝাই। কারণ মার দেওয়া যদি আরেকজন মার দেনেওয়ালার জন্ম দেয় তাহলে সেই সূত্র অনুযায়ী ভালোবাসা দিলে আরেকজন ভালোবাসা দেনেওয়ালা জন্ম নেবে। একজনকে মার দিলে সেটা ছড়িয়ে যাচ্ছে সবার মাঝে। তাই মার দেওয়া বন্ধ করে ভালোবাসা দেই এবং সেই ভালোবাসা অবশ্যই সবার মাঝে ছড়িয়ে যাবে।
মার দেবার ভুলমন্ত্র ত্যাগ করে ভালোবাসার মূলমন্ত্র গ্রহণ করি এবং চর্চা করি।
 এম এস আরেফীন, সিডনি, অস্ট্রেলিয়া
|