
বিদগ্ধ নাম
আজ বুঝে নিলাম তোকে। কোন এক কর্মকর্তার হাত থেকে। আজ নামিয়ে নিলাম তোকে। ডোম ঘরের সজ্জিত তাক থেকে। ঠিক যেমনটি বুঝে নিয়েছিলাম, আজ থেকে ২১ বছর আগে। তোর জন্মের ক্ষণে, নার্সের হাত থেকে।
আজ বুঝে গেলাম তোকে। বড্ড অভিমান ছিলো তোর বুকে।
কতদিন, কতজন ডেকেছে এই ভাবে। “এনামুলের বাবা” ঠিক এই নামে। আজও কেউ হাঁকলো ঠিক এই ডাকে। বুঝিনি সে তো আমারই ছেলে, ঢলে আছে মৃত্যুর বুকে।
বীভৎস আগুনের হিংস্র থাবা। মুহূর্তেই সব মুছে দিলো।
এখন আমি এক পোড়া লাশের বাবা।
|
শ্মশান নৃত্য
চারিদিকে কেমন যেন, গুমোট একটা ভাব। গুমোট গন্ধে স্তব্ধ ঘরে, শ্মশানের আবির্ভাব।
গর্ভের গর্ব খর্ব হলো, স্বামী স্ত্রী জাতক ভস্ম হলো। চারটি বন্ধুর অবাধ বন্ধন, তাদের মায়েদের অপার ক্রন্দন। ছোট্ট শিশুর এক ছোট্ট ইচ্ছা, হয়ে রইলো তার শেষ ইচ্ছা। বুকে জড়াজড়ি করে দুই সহোদর, তাদের মাঝেও এক ছোট্ট উরদ। মায়ের মনটা চায়না মানতে, চাচ্ছে ছেলের দলাটা ধরতে।
এইসবই আজ এক ইতিহাস। আমার প্রাণের পুরনো ঢাকার, আরো একটি দীর্ঘশ্বাস।
কবরের খবরটা দেয়া হলোনা। শেষ নামাযটা পড়ানো গেলো না। তাদেরকে গোসল দেবার সুযোগও ছিলোনা।
ভয়ানক আগুন বীভৎস তেজে। পুড়িয়ে মেরেছে শ্মশান সেজে। ছোট অলি গলির দিলওয়ালা লোকগুলো। এভাবে পুড়ে ছাই ভস্ম হলো।
মরার আগের শেষ কলেমাটা। ফায়ার সার্ভিসের দেয়া শেষ গোসলটা। লেলিহান শিখার বীভৎস তেজটা। এইসবই ছিলো তাদের শেষ কৃত্য। কুৎসিত আগুন দেখিয়ে গেলো, শত শত প্রাণের মরণ নৃত্য। |