bangla-sydney
bangla-sydney.com
News and views of Bangladeshi community in Australia












সিডনীর বৈশাখী উত্সব - আনিসুর রহমান

বর্ষবরণ অনুষ্ঠান বাংলাদেশে এখন আর রমনার বটমূলে সীমাবদ্ধ নেই। চারুকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় প্রেসক্লাব, খেলাঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, শিশু একাডেমি, উদীচী, নজরুল একাডেমি সবাই এই দিনটি উদযাপন করে বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা সাজিয়ে। ১৭ বছর আগে বাংলা ১৪০০ সালে একটা ছোট্ট বৈশাখী মেলা আয়োজনের মধ্য দিয়ে সিডনিতে বর্ষবরণ বা বৈশাখী উত্সবের সূচনা করে বঙ্গবন্ধু পরিষদ। ধীরে ধীরে বেড়েছে মেলার কলেবর এবং সংখ্যা। যুক্ত হয়েছে রমনার বটমূলের আদলে আয়োজিত প্রতীতির অনুষ্ঠান। বাংলা ১৪১৭ কে বরণ করতে আমার জানামতে এ পর্যন্ত সিডনিতে আয়োজিত হয়েছে তিনটি অনুষ্ঠান। ৪র্থ টি, প্রতীতির বর্ষবরন, অনুষ্ঠিত হবে আগামী শনিবার (২৪/৪/২০১০)।

বৈসাবি - ২০১০
গত ১০ই এপ্রিল গ্রেস পয়েন্ট কমিউনিটি সেন্টারে সিডনীর প্রথম বর্ষবরন (বৈসাবি) অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেছিল অস্ট্রলিয়ায় বসবাসকারী জুম্মা নামে পরিচিত পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন আদিবাসী বাংলাদেশীদের সংগঠন, অস্ট্রলিয়ান জুম্মা আদিবাসী কমিউনিটি। জুম্মা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশেরই মানুষ। বৈসাবি বাংলাদেশেরই একটি অনুষ্ঠান। কিন্তু আমি গত ১০ই এপ্রিল এর আগে এই শব্দটি কখনো শুনিনি। এ লজ্জার কিছুটা আমার, কিছুটা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার।

ছোট হল ঘরটিতে টেবিল চেয়ার পেতে করা হয়েছিল অতিথিদের বসার ব্যবস্থা। এক পাশে লম্বা টেবিলে থরে থরে সাজানো খাবার, কিছু চেনা কিছু অচেনা। পার্বত্য চট্টগ্রামে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সহিংস ঘটনার পটভূমিতে আয়োজিত এই আনন্দ অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল দেশে ফেলে আসা প্রিয়জনদের জন্য আশংকা এবং ন্যায় বিচারের দাবিতে জনমত সৃষ্টির প্রচেষ্টা।

টেম্পি বৈশাখী মেলা
একই দিনে (১০ই এপ্রিল ২০১০) অনুষ্ঠিত হয়েছে সিডনীর পূর্বাঞ্চলীয় সাবার্ব টেম্পিতে বঙ্গবন্ধু সোসাইটি আয়োজিত বৈশাখী মেলা। বঙ্গবন্ধু সোসাইটির দুই অংশ এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদের একত্রীকরন প্রচেষ্টা কতখানি সফল হয়েছে সে আলোচনায় না গিয়ে টেম্পি মেলা শেষ পর্যন্ত সফল ভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে সেটাই অর্জনের মাপকাঠি হওয়া উচিৎ। সাড়ে তিনটায় মেলায় পৌছেও অনেক দুরে গাড়ি পার্ক করতে হয়েছে। সাড়ে ছয়টায় বাড়ি ফেরার সময় যে দীর্ঘ গাড়ির লাইন মেলা চত্তরে ঢুকতে দেখেছি তারা কোথায় গাড়ি রাখবে ভেবে পাইনি। মেলা প্রাঙ্গনে ঢোকার রাস্তায় নো পার্কিং সাইন থাকা সত্তেও অনেকে গাড়ি পার্ক করেছিলেন। ফেরার সময় দেখলাম সব গাড়িতে ৮৯ ডলারের ফাইন ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। গাছপালা পরিবেষ্টিত টেম্পি পার্কটি মেলার জন্য চমত্কার হলেও গাড়ি পার্কিংয়ের সমস্যার কারনেই হয়তো অন্যত্র জায়গা খোজার প্রয়োজন হবে। নাচ, গান, কবিতা, রকমারি দেশী খাবার এবং দেশী পন্যের এক বিশাল সমাহারের মধ্যে এবারের টেম্পি মেলার বিশেষ আকর্ষন ছিল সদ্য আমদানিকৃত দেশী কদবেল! মঞ্চের ডান পাশে একটা স্টলে পাওয়া যাচ্ছিলো।

অলিম্পিক পার্কের বৈশাখী মেলা
গত ১৭ই এপ্রিল অনুষ্ঠিত হল অস্ট্রলিয়ার বাঙালীদের সর্ববৃহত্ সমাবেশ অলিম্পিক পার্কে বঙ্গবন্ধু কাউন্সিল আয়োজিত বৈশাখী মেলা। ২০০৬ (বাংলা ১৪১৩) সাল থেকে অলিম্পিক পার্কে বৈশাখী মেলা উদযাপন শুরু হয়। এতদিন মেলাটির আয়োজন করেছে বঙ্গবন্ধু পরিষদ। অভ্যন্তরিন সমস্যার কারনে সংগঠনের নাম এবং নেতৃত্ব চলে যায় সদস্যদের এক অংশের হাতে। আগামীতে এই কমিটির নেতৃত্বেই অলিম্পিক পার্কের বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হবে বলে ধারনা করা হচ্ছিল। সংগঠনের নাম হারিয়ে প্রাক্তন নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধু কাউন্সিল নামে নতুন সংগঠন তৈরী করে মেলার আয়োজনে সচেষ্ট হন; যা গত ১৭ই এপ্রিল সফল ভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং সেই সাথে প্রমানিত হয়েছে, অন্ততঃ সিডনি অলিম্পিক পার্ক অথরিটির দৃষ্টিকোণ থেকে এ মেলার আয়োজক কোন সংগঠন নয় বরং যারা এতদিন আয়োজন করেছেন বা যোগাযোগ রেখেছেন তারা।

আসল সাফল্য
অনুমান করা হয় ১৫ থেকে ১৮ হাজার লোক অলিম্পিক পার্কের বৈশাখী মেলায় এসেছিল। এ সফলতাকে ছোট করে দেখার কোন কারন নেই। তবে আমার মতে মেলার আসল সাফল্যটি অন্যখানে। মূলত ৭০ দশক থেকে অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশীদের আগমন শুরু হয়। সেই থেকে আমাদের সকল কর্মকান্ডের ভেতরে যে ইচ্ছাটি প্রচ্ছন্ন ভাবে সকলকে অনুপ্রেরনা যুগিয়েছে সেটা হল নতুন প্রজন্মকে আমাদের সংস্কৃতির সাথে সম্পৃক্ত রাখা। কিন্তু সে প্রচেষ্টা সফল হয়নি। স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান - কোন কিছুতেই এ দেশে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহন নিশ্চিত করা যায়নি। এই অসাধ্য সাধন করেছে অলিম্পিক পার্ক বৈশাখী মেলা। সিডনিতে এখন বেশ কয়েকটি মেলা হচ্ছে নিয়মিত। সেসব মেলায়ও নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা যাচ্ছে কিন্তু অলিম্পিক পার্কের ব্যাপারটা ভিন্ন। আনন্দঘন পরিবেশ, শেকড়ের প্রতি টান, দেশী পণ্যের আকর্ষণ, ধর্মনিরপেক্ষ সার্বজনিনতা সবসময় বাঙালীকে মেলায় টেনেছে। কিন্তু অলিম্পিক পার্কের আবেদন এর সাথে যুক্ত করেছে একটি সম্পূর্ণ নতুন মাত্রা যা নতুন পুরাতন উভয় প্রজন্মকেই প্রবল ভাবে আকর্ষণ করে।




Share on Facebook               Home Page             Published on: 22-Apr-2010

Coming Events:



A day full of activities, games and fun.







Lakemba Blacktown Mascot
Minto Money raised so far





Lakemba Blacktown Mascot
Minto Money raised so far



Blacktown Lakemba Mascot
Minto Money raised so far







Blacktown Lakemba Mascot
Minto Money raised so far