আনিসুর রহমান  কৈ মাছ খেতে কে না ভালোবাসে। আগে জানতাম এ মাছ শুধু বাংলাদেশের খালে বিলে পাওয়া যায়। পরে জেনেছি থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনামেও কৈ মাছ আছে। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় টিভি চ্যানেল ABC তে একটা খবর দেখে খুব উৎসাহিত হয়েছিলাম। কৈ মাছ অস্ট্রেলিয়ায় আসছে। এমন খবরে কে না খুশি হবে। বাঙ্গালীর মত কৈ মাছও এখন দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছে। থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ছেড়ে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া হয়ে তারা এখন পাপুয়া নিউ গিনি তে। অস্ট্রেলিয়ার উত্তরে গণ্ডারের সিং এর মত একটা ভূখণ্ড আছে। এর নাম কেপ ইয়র্ক পেনিনসুলা। কেপ ইয়র্ক পেনিনসুলা'র চুড়া থেকে পাপুয়া নিউ গিনির দূরত্ব মাত্র ১৫০ কিলোমিটার। মাঝের জলরাশির নাম টরেস স্ট্রেট। সম্প্রতি টরেস স্ট্রেট এর কিছু কিছু দ্বীপে কৈ মাছের দেখা পাওয়া গেছে এবং সেটাই অস্ট্রেলিয়ার মাথা ব্যথার কারণ।  এদেশে এক ধরনের মাছ আছে তার নাম পার্চ। কৈ মাছ এদের সম-গোত্রীয়। কিন্তু স্বভাবের কারণে কৈ মাছকে এরা বলে ক্লাইম্বিং পার্চ (climbing perch). কৈ মাছ কানসা দিয়ে ঘেসটে ঘেসটে খাল-বিল বা পুকুর থেকে উঠে আসতে পারে। তাই এমন নাম। ছোট বেলায় কৈ মাছের গাছে ওঠার গল্পও শুনেছি তাই মনে হলো নামটা মন্দ না, "গাছুয়া কৈ"! শুধু তাই নয় ফুলকার পাশাপাশি কৈ মাছের ছোট একটা ফুসফুস ও আছে। এরা ঘেসটে ঘেসটে এক পুকুর থেকে অন্য পুকুরে যাবার সময় সপ্তাহ খানেক ডাঙ্গাতেও বেঁচে থাকতে পারে। অস্ট্রেলিয়া লক্ষ লক্ষ বছর ধরে একটা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। এদেশের পশুপাখিরা পৃথিবীর অন্যান্য এলাকার পশুপাখিদের থেকে আলাদা। এখানে অন্য অঞ্চল  থেকে নতুন কোন প্রজাতি ঢুকে পড়লে বিপর্যয় ঘটতে পারে। অস্ট্রেলিয়ার প্রাণীরা কৈ মাছের সাথে পরিচিত নয়। এ মাছ যদি এদেশের খাল-বিল, নদী-নালায় ঢুকে পড়ে তাহলে জলজ প্রাণীর সাথে ডাঙ্গার পশুপাখীরাও এদের খেতে গিয়ে গলায় বিধে মারা যাবে। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় তা বিশাল হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। অস্ট্রেলিয়ায় কৈ মাছের বিস্তার রোধের জন্য কুইন্সল্যান্ডের জেমস কুক ইউনিভার্সিটির গবেষকরা এক রকম উঠে পড়েই লেগেছেন!আনিসুর রহমান, সিডনি |
Share on Facebook 
Home Page Published on: 12-Jun-2015 
