বিকল্প জীবন! আনিসুর রহমান
১৯৭৮ সালের ২৫শে জুলাই ইংল্যান্ডের ল্যাঙ্কাশায়ারে IVF পদ্ধতিতে জন্ম নিয়েছিল পৃথিবীর প্রথম মানব শিশু, লুইস ব্রাউন। তার বয়স এখন ৪২ বছর।
১৯৯৬ সালের ৫ই জুলাই স্কটল্যান্ড এর পশু বিজ্ঞান গবেষণা প্রতিষ্ঠান রজলিন ইন্সটিটিউটে ক্লোনিং পদ্ধতিতে একটি ভেড়ার জন্ম দিতে সক্ষম হয়েছিলেন দুজন বিজ্ঞানী। তারা ভেড়াটার নাম দিয়েছিলেন ডলি। সারা বিশ্বে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল ঘটনাটা। ভেড়ারা সাধারণতঃ ১০ থেকে ১২ বছর বাঁচে। ডলি বেঁচেছিল প্রায় ৭ বছর।
এবছর মার্চ মাসে মেলবোর্নের মনাশ ইউনিভারসিটি বিজ্ঞানীরা কোনো ডিম্বাণু এবং শুক্রাণু ছাড়াই একটি মানব ভ্রূণ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন এবং সেই সাথে জন্ম দিয়েছেন অনেক নৈতিক উভয়-সংকটের।
এই পদ্ধতিগুলো সাধারণভাবে শুনতে একই রকমই মনে হয় কিন্তু এদের মধ্যে রয়েছে বিস্তর পার্থক্য। অনেকটা খড়ির চুলা, ইলেকট্রিক স্টোভ এবং মাইক্রোওয়েভে রান্না করার মত। মানুষ আগুনের ব্যবহার শিখেছে ৩ লক্ষ বছর আগে। প্রথম ইলেকট্রিক স্টোভ আবিষ্কৃত হয় ১৮৯৬ সালে। আর মাইক্রোওয়েভ ওভেনের ব্যবহার শুরু হয়েছে গত শতকের মাঝামাঝি থেকে।
IVF, ক্লোনিং এবং কৃত্রিম ভ্রূণ এই প্রক্রিয়াগুলির মধ্যেও রয়েছে অনেক পদ্ধতিগত এবং কারিগরি পার্থক্য। এই কৃত্রিম ভ্রূণগুলি থেকে মানব শিশুর জন্ম দেয়া সম্ভব কিনা সে ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা এখনো নিশ্চিত নন। অস্ট্রেলিয়ার নিয়ম অনুসারে এই ভ্রূণগুলিকে ১১ দিনের বেশি বড় হতে দেওয়া হয়নি। অস্ট্রেলিয়ার খ্রিস্টীয় বিশ্বাস এবং মূল্যবোধ অনুযায়ী ডিম্বাণু এবং শুক্রাণুর মিলন (Fertilisation) এর মুহূর্ত থেকে জীবন শুরু হয়। কিন্তু এই কৃত্রিম ভ্রূণগুলি ফার্টিলাইজেশন ছাড়াই তৈরি করা হয়েছে সে ক্ষেত্রে প্রচলিত অনুশাসন মেনে চলার প্রয়োজন আছে কিনা তা নিয়েও উঠেছে না না প্রশ্ন।
আনিসুর রহমান, সিডনি
|