bangla-sydney
bangla-sydney.com
News and views of Bangladeshi community in Australia













মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাঁচ সপ্তাহ (৫ম পর্ব)
সরদার আমীর আজম

আগের অংশ পরের অংশ



এদিকে প্রচণ্ড ক্ষুধাও লেগেছে। এয়ারলাইন্স কোন ব্যবস্থা করলনা। এয়ারপোর্টের দোকানগুলিতে যা পাওয়া গেল তাই দিয়ে কোন রকমের ক্ষুধা নিবারণ, পছন্দ বা স্বাদের বালাই ছিলনা। শেষপর্যন্ত, আরো ঘন্টাদুয়েক বিরক্তিকর অপেক্ষার পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে স্ক্রিনে দেখাল, সাড়ে ১২টা ছাড়ার সময়। তবুও ভরসা পেলাম যে, কোন রকমে লস এঞ্জেলসে পৌছতে পারলে হয়। তারপর ওখানে গিয়ে দেখা যাবে। এর কিছুক্ষণ পরেই দেখাল, আমাদের ফ্লাইট বাতিল। বলা হল, আবার কাষ্টমার সার্ভিস ডেস্কে যাওয়ার জন্য রি-বুক করতে।

মাথায় বাজ পড়ল যেন। এযেন ‘এক মন দুধে এক ফোটা চনা’। সারা ৫ সপ্তাহের সব আনন্দ মাটি হয়ে যাওয়ার মত অবস্থা। নিরুপায় হয়ে আবারো লাইনে দাঁড়ানো। এখনতো দু’টো সেক্টরই রি-বুক করতে হবে। এবারে লাইন আরো বড় (শত শত লোক) এবং খুবই ধীরগতিতে এগোচ্ছে। প্রচুর ফ্লাইটের (কানেক্টিং ফ্লাইটসহ) শিডিউল বিপর্যয়। ২/৩টি সার্ভিস ডেস্ক থাকলেও একজন কিংবা এক গ্রুপ কাষ্টমারকে রি-বুক করতে ৫ মিনিট থেকে আধা ঘণ্টা পর্যন্ত লেগে যাচ্ছিল। এরকম অবস্থায় প্রায় ৩ ঘণ্টা লেগে গিয়েছিল কাউন্টারে পৌছতে। আমি ও ঈশান পালা করে লাইনে এগিয়েছিলাম। ঈশানের জন্য বেশ মায়াই লাগছিল। ভাগ্যিস ও একা ছিলনা। তবুও ওর বয়সী অনেক ছেলে-মেয়ে লাইনে দাঁড়িয়েছিল। এই অল্প বয়সে ওর এই ধরনের একটি কঠিন অভিজ্ঞতা ওর ভবিষ্যৎ চলার পথে কাজে লাগবে অবশ্যই (বিশেষ করে বিমানভ্রমনের ক্ষেত্রে)। আমাদেরকে রি-বুক করতে কাউন্টারের মহিলার বেশ বেগ পেতে হয়েছিল, কারণ আটকে পরা অনেক যাত্রীকে রি-বুক করতে পরবর্তী available ফ্লাইটে একসাথে ৩টি করে সিট খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন হয়েছিল। শেষপর্যন্ত পেরেছিল, কিন্তু ১ দিন পরে ২৭ তারিখ (সোমবারের পরিবর্তে বুধবার সকালে) নিউইয়র্ক-এল এ সকালে এবং তারপর এল এ পৌঁছে ১০ ঘণ্টা পরে রাতে যাত্রা করে ২৯ তারিখ সকালে সিডনী পৌছা। তখন রাত প্রায় তিনটা।

কিন্তু এবার দ্বিতীয় সমস্যা - ‘হরিষে বিষাদ’ অবস্থার মত। কাউন্টারে মহিলা স্পষ্ট করে বলেনি যে ১ দিন পরে আমাদের ফ্লাইট, বোর্ডিং কার্ডগুলি হাতে পেয়েই চলে এসেছিলাম (সে ছিল যেন এক বিরাট হাফ ছেড়ে বাঁচা অবস্থা!)। ভেবেছিলাম পরদিন মঙ্গলবার সকালে ফ্লাইট, তাই এয়ারপোর্টে কোন রকমে রাতটা কাটিয়ে দিয়ে সকালে ফ্লাইট ধরব। কিন্তু ভাল করে চেক করতে গিয়ে দেখি ১ দিন পরে ফ্লাইট বুধবার সকালে। এখন ৮ ঘণ্টার জায়গায় ৩২ ঘণ্টা থাকার ব্যাপার। দৌড়ালাম কাষ্টমার সার্ভিসের মহিলার কাছে। এর বাইরে আর কিছু করার নেই বলে সে তার অপারগতার কথা জানাল। হোটেলের কথা বলাতে বলল আবহাওয়া-জনিত সমস্যার কারণে তারা হোটেল দেয়না, এটি তাদের কোন দোষ নয়। অতএব, হতাশ হয়ে ফিরে আসা। একটানা নির্ঘুম লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে খুবই ক্লান্ত ও অবসাদগ্রস্ত, তাই নিদ্রায় চোখ ঢুলু ঢুলু, মনে হচ্ছিল কোথাও গাটা এলিয়ে দিতে পারলেই ঘুমিয়ে পড়ব। নিউইয়র্কে আর ফিরে যেতে ইচ্ছে হচ্ছিলনা। জামাতাকে ডাকলে আসতে ঘন্টাখানেক আবার যেতে ঘন্টাখানেক। এরপর নির্বিঘ্নে ঘুমানো যাবে কিনা সে এক প্রশ্ন। এমনিতেই সবাইকে অনেক বিরক্ত করা হয়েছে ইতিমধ্যে। তার উপর ২৭ তারিখে খুব ভোরে উঠে আসতে হবে নিউইয়র্কের রাস্তার সকালের প্রচণ্ড ভিড় ঠেলে, সেক্ষেত্রে আবার কোথাও কোন বিপাকে পড়ব কিনা (‘ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায়’ অবস্থার মত)। তাই আর কোন ধরনের সম্ভাব্য ফ্লাইট মিস সংক্রান্ত শঙ্কা থেকে চিন্তা করছিলাম এয়ারপোর্টের কাছাকাছি কোন হোটেলে থাকা গেলে পুরো দিনটা নির্বিঘ্নে ঘুমিয়েও কাটানো যাবে এবং খুব সকালে ফ্লাইট ধরতেও সমস্যা হবেনা। এয়ারপোর্টের এক মহিলা স্টাফের কাছে এ ব্যাপারে পরামর্শ চাইলে সে কাছেই সাটল ট্রেন ধরে পি-৪ নামে একটি জায়গায় যেতে বলল যেখানে নিকটস্থ ৮/১০টি হোটেলে সরাসরি টেলিফোন করার ব্যবস্থা আছে। কিন্তু সকাল না হলে হোটেলে কোন রুম পাওয়া যাবেনা বলে শঙ্কা প্রকাশ করল। হলও তাই। কারণটাও পরিষ্কার। শত শত আটকে পড়া যাত্রীদের মধ্যে অনেকেই তখন আশে-পাশের হোটেলগুলিতে জায়গা করে নিয়েছে। ব্যর্থ হয়ে আবার এয়ারপোর্টে ফেরত গিয়ে চেয়ারে বসে ঘনটা দুয়েক বিশ্রাম নিলাম সকাল হওয়া পর্যন্ত। আবার গেলাম পি-৪-এ। এবারে প্রথম হোটেলে রিং করতেই রুম পাওয়া গেল এবং সাটল সার্ভিসও আছে। ৫ মিনিটের মধ্যে সাটল আসল। খুব একটা ভাল হোটেল নয়, এমনকি কোন স্ট্যান্ডার্ডেই ফেলা যাবেনা। কিন্তু এতই ক্লান্ত ও ঘুম ঘুম অবস্থায় ছিলাম যে, তখন ভাল-মন্দ বিচার করার মত অবস্থা ছিলনা। সোজা রুমে গিয়ে বিশ্রাম। তার আগে পাশেই একটি বার্গার কিং শপ থেকে ব্রেকফাস্ট সেরে নিলাম। এককথায় সে ছিল যেন প্রায় ১২/১৪ ঘণ্টার এক nightmare (দুঃস্বপ্ন)। এরপরেও আবার সমস্যা হোল কাপড়-চোপড় নিয়ে। ওজন থাকায় আমর ল্যাপটপ, স্ত্রীর হাতব্যাগ ও ঈশানের ব্যাকপ্যাক ছাড়া সব বড় সুটকেস ও ক্যাবিনব্যাগ বুক করে দিয়েছিলাম। তাই ৪দিন ধরে এক কাপড়ে হোটেলে থেকে সিডনী পর্যন্ত আসতে হয়েছিল। যাইহোক, ১ দিনের জন্য হলেও নিউ জার্সি রাজ্যটিও (ছোট্ট একটি অংশ যদিও) যুক্ত হল আমাদের দর্শনের তালিকায়।


ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ন্যাশনাল কনভেনশন

আমার জন্য কিছুটা হলেও ভাল হয়েছিল বলব। ইতিপূর্বেই উল্লেখ করেছি ১৮ থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত রিপাবলিকান পার্টির ন্যাশনাল কনভেনশনের কথা, যার প্রায় পুরোটাই ওয়েস্ট ভার্জিনিয়াতে বসে দেখার সুযোগ হয়েছিল। কিন্তু ২৫ তারিখে সিডনী ফেরার কারণে ২৫ থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত পেনসিলভানিয়া রাজ্যের ফিলাডেলফিয়াতে অনুষ্ঠিত ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কনভেনশনের লাইভ কাভারেজ মিস করার কথা ছিল। ইতিপূর্বেই প্রথম দিন মিস হয়ে গেছে। আজ ২৬ জুলাই দ্বিতীয় দিন। যাইহোক, এই প্রথম কনভেনশনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সরাসরি দেখার সুযোগ হল হোটেলে টিভিতে। প্রাইমারীতে পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের ৫০টি রাজ্যে প্রাপ্ত ভোটের ফল কনভেনশনে একটি প্রথাগত রাজ্যভিত্তিক “রোল কল” পদ্ধতির মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয় এবং এর মাধ্যমে বিজয়ী প্রার্থী আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে endorsement (অনুমোদন) পেয়ে আত্মপ্রকাশ করে। প্রাইমারীর দৌড়ে সর্বশেষ দুই প্রার্থী ছিল হিলারি ক্লিনটন (নিউইয়র্ক রাজ্যের) এবং সিনেটর বার্নি স্যান্ডারস (ভেরমন্ট রাজ্যের)। ফলাফল ঘোষণা করা হল রাজ্যগুলির অ্যালফাবেটিকাল অর্ডারে (এ থেকে জেড)। সেই অর্ডারে অ্যালাব্যামা রাজ্য দিয়ে শুরু, বার্নি স্যান্ডার্সের রাজ্য ভেরমন্ট ছিল ৪৫তম এবং সর্বশেষ রাজ্য ছিল ওয়াইওমিং। ফলাফল ঘোষণার দায়িত্বপ্রাপ্ত মহিলা এক এক করে প্রত্যেকটি রাজ্যের নাম ঘোষণা করছিল এবং সেই রাজ্যের মনোনীত প্রতিনিধি প্রত্যেক প্রার্থীকে তাদের প্রদত্ত ভোট সংখ্যা জানিয়ে দিচ্ছিল, যা স্ক্রিনে সর্বমোট আকারে দেখানো হচ্ছিল। এইভাবে পর্যায়ক্রমে যখন ভেরমন্টের রাজ্যের টার্ন আসল তখন ভেরমন্ট প্রতিনিধি ফলাফল ঘোষণা না করে ‘পাস’ করে গিয়ে একটু চমকের সৃষ্টি করল (যার কারণ ফলাফল ঘোষণার একেবারে শেষে এসে বোঝা গিয়েছিল)। সর্বশেষ রাজ্য ওয়াইওমিং তাদের ফলাফল ঘোষণার পরপরই দেখা গেল বার্নি স্যান্ডারস তার নির্ধারিত সিট থেকে উঠে তার রাজ্যরে প্রতিনিধিদের জন্য নির্ধারিত জায়গায় চলে গেল। এখানেই ছিল ভেরমন্ট রাজ্যের পাস করে যাওয়ার চমকটি। ব্যাতিক্রমধর্মীভাবে বার্নি স্যান্ডারস নিজেই তার রাজ্যের ফলাফল ঘোষণা করল (যদিও সেই ভোটগুলি ছিল তারই) এবং তার রাজ্যের ও উপস্থিত প্রতিনিধিদের যারা তাকে সমর্থন করেছে তাদের ধন্যবাদ জানাল। তখন স্ক্রিনে দেখা যাচ্ছিল হিলারির সর্বমোট ভোট ২,৮৪২ এবং বার্নির ১,৮৬৫। এরপর বার্নি নিজেই হিলারি ক্লিনটনকে ২০১৬ সালের ডেমোক্রেট পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে প্রস্তাব করল। এই ছিল চমকটি। উপস্থিত প্রতিনিধিরা প্রচণ্ড উত্তেজনা ও উল্লাসে ফেটে পড়ে তার প্রস্তাবকে সমর্থন করল। সে এক দর্শনীয় দৃশ্য ছিল বটে। এমনিভাবে, ডেমোক্রেটরা প্রাইমারীতে সব ধরনের ভেদাভেদকে ভুলে গিয়ে কনভেনশনে সবাই মিলে হিলারির পেছনে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একাকার হয়ে গিয়েছিল। এখানেই ছিল রিপাবলিকানদের ব্যর্থতা আগের সপ্তাহে তাদের কনভেনশনে, যেখানে ট্রাম্প সমর্থকরা প্রথাগত “রোল কল” পদ্ধতিকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠি দেখিয়ে কন্ঠভোটে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অনুমোদন দিয়েছিল। অন্যদিকে, তারা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী টেড ক্রুজকে সম্মান দেখানোতো দূরের কথা, অসম্মান করতে কুণ্ঠা বোধ করেনি। ঐক্যতো দূরের কথা।

এরপর, স্ক্রিনে একে একে প্রত্যেক সাবেক প্রেসিডেন্টদের ছবি দেখিয়ে সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ছবি দেখানো হল। স্ক্রিনে তখন সব সাবেক প্রেসিডেন্টদের ছবি। তারপর সব ছবিগুলিকে ভেঙ্গে একাকার করে বেরিয়ে আসল হিলারি কিল্টনের ছবি, যে কনভেনশনের বাইরে কোথাও থেকে সবাইকে ধন্যবাদ জানালো। এটিও ছিল দর্শনীয়। এরপর একে একে মেয়ে চেলসি, বার্নি স্যান্ডারস, ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ভার্জিনিয়ার সিনেটর টিম কেইন, স্বামী সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং প্রেসিডেন্ট ওবামার ভাষণ। হোটেলেই সুযোগ হয়েছিল বিল ক্লিনটনের ভাষণ দেখার যা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনেছিলাম। এই বয়সেও সে এখনো একজন ভাল বক্তা। রাজনৈতিক কথাবার্তা না বলে কিংবা প্রতিপক্ষের প্রতি আক্রমণাত্মক না হয়ে সে বরং কিভাবে হিলারির ব্যক্তিত্ব ও কর্মকাণ্ডে মুগ্ধ হয়ে বিয়ে করল সেই ইতিহাস, হিলারির প্রধান প্রধান গুণাবলি ও বৈশিষ্ট্যগুলিকে সুন্দর করে তুলে ধরল। বিশেষ করে, শিশুদের উন্নয়ন, জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা, ইত্যাদি বিষয়গুলিতে তার বিচক্ষণতা ও কমিটমেন্টের ভূয়সী প্রশংসা করল এবং একজন changemaker (পরিবর্তনবাদি) হিসেবে তুলে ধরে তার বক্তব্য শেষ করল। সিডনীতে ফিরে ইউ টিউবে অন্যদের বক্তব্য শুনেছিলাম। চেলসি মূলতঃ একজন ভাল ও সুন্দর মা হিসেবে হিলারিকে উপস্থাপন করেছিল। ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী টিম কেইন এবং বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও সুন্দর ও চমকপ্রদ বক্তব্য দিইয়েছিল। শেষ পর্যায়ে প্রেসিডেন্ট ওবামা দিয়েছিল তার মোহনীয় ও সাড়াজাগানো বক্তব্য তার সরকারের আমলে বিভিন্ন সাফল্য (যেমন, স্বাস্থ্য বীমাকে তৃনমূলে নিয়ে যাওয়া, কয়েক মিলিয়ন কর্মসংস্থান, ইত্যাদি) এবং হিলারির গুনসমূহ তুলে ধরে। তার বক্তব্যের শেষে হিলারি ক্লিনটন মঞ্চে এসে তাকে আলিঙ্গন করে দুজনে হাত ধরে বেরিয়ে গেল (মনে হচ্ছিল যেন বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রেসিডেন্ট)। হিলারি ক্লিনটনের acceptance speech-ও ছিল গোছানো, পরিকল্পিত ও মোহনীয়, যাতে প্রতিপক্ষের সমালোচনার পরিবর্তে আমেরিকার জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাই প্রাধান্য পেয়েছিল (এখানেই মনে হয়েছে বাচাল, মাথাগরম ও উগ্র ট্রাম্পের সাথে তার পার্থক্য)। ঘটনাচক্রে, এই কনভেনশনের একটি বাড়তি আকর্ষণ ছিল খিজির খান (সম্ভবত: পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত) নামের এক মুসলমান ইমিগ্রান্টের ভাষণ, যার ছেলে হুমায়ুন খান ইরাকে যুদ্ধরত অবস্থায় মারা গেছে। ভাষণে খিজির খান ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে বলেছিল যে, মুসলিম ইমিগ্রান্ট হিসেবে সে আমেরিকার জন্য তার ছেলেকে বিসর্জন দিয়েছে, কিন্তু ট্রাম্প তেমন কোন বিসর্জন দেয়নি, যা অনেক আমেরিকা-বাসীর দৃষ্টি কেড়েছে ও হৃদয় স্পর্শ করেছে। এর উত্তর দিতে গিয়ে ট্রাম্পকে অনেক হিমশিম খতে হয়েছে এবং ঘটনাটি ট্রাম্পকে অনেকটা বেকায়দায় ফেলেছে বৈকি! আরো একটি আকর্ষণ ছিল নিউইয়র্কের সাবেক মেয়র বিলিয়নিয়ার মাইকেল ব্লুমনার্গের ভাষণ। ২০০২ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত মেয়র (২০০৭ পর্যন্ত রিপাবলিকান হিসেবে এবং এরপর স্বতন্ত্র) হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সময় সে ট্রাম্পের খুব বন্ধু ছিল। কিন্তু এখন তার বিরোধী এবং স্বতন্ত্র হিসেবে হিলারিকে সমর্থন করে ভাষণ দিয়েছিল। মাত্র ১০ মিনিটের ভাষণে সে ট্রাম্পকে তূলা-ধুনা করে ছেড়ে দিয়েছিল এই বলে, ব্যবসায়ী ও প্রেসিডেন্ট হওয়ার গুণাবলি আলাদা এবং দীর্ঘ সময় সরকারে বিভিন্ন উচ্চপদে চাকুরী করে হিলারি ক্লিনটনের প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্যতা অনেক অনেক বেশি। তবে, এত সবকিছুর বাইরেও একমাত্র হিলারির আমলের ই-মেইল স্ক্যান্ডালটি এখনো একটি বড় প্রশ্নবোধক হয়ে আছে বলে মনে হয়েছে! সেক্রেটারি অফ এষ্টেটস থাকাকালীন হিলারি ক্লিনটন প্রচুর ক্লাসিফাইড রাষ্ট্রীয় গোপন ই-মেইল তার ব্যক্তিগত ই-মেইল সার্ভার থেকে ব্যবহার করেছিল, তদন্তকারীদের মতে যা বেশ উদাসীনতা ও দায়িত্ব অবহেলার পর্যায়ে পড়ে। এব্যাপারে পূর্ববর্তী সেক্রেটারি অফ এষ্টেটসরাও এরকম করেছিল হিলারির এই যুক্তি তেমন ধোপে টিকেনা এবং ট্রাম্প ও তার সমর্থকরা এটাকে হিলারির বিরুদ্ধে একটি শক্ত অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার সুযোগ পেয়েছে বৈকি। যাইহোক, এখন সবার দৃষ্টি নিবদ্ধ নভেম্বরের ৮ তারিখের ভোটের দিনটির দিকে।

অবশেষে, ২৭ জুলাই সকালে নিউইয়র্ক এয়ারপোর্ট থেকে নির্বিঘ্নেই ফ্লাইট ধরা গিয়েছিল। লস এঞ্জেলসে এসে দীর্ঘ ১০ ঘণ্টার বিরক্তিকর অপেক্ষা ছিল যদিও। তবে ২ দিন আগে বুক করে দেয়া লাগেজ আমাদের সাথে যাচ্ছে কিনা সেটা নিউইয়র্ক ও লস এঞ্জেলস এ দুই এয়ারপোর্টের কাষ্টমার সার্ভিস থেকে নিশ্চিত করে নিয়েছিলাম। যাইহোক, আর কোন দুর্বিপাকে পরতে হয়নি ভাগ্যিস! ২৯ তারিখ সকালে সিডনীতে অবতরণ করলাম নিরাপদে। আর সেইসাথে ৩দিন আগে বুক করে দেওয়া লাগেজগুলি ঠিকঠাক মত পেয়ে সে এক দীর্ঘ হাফ ছেড়ে বাঁচা আর কি! (চলবে)



আগের অংশ পরের অংশ






Share on Facebook               Home Page             Published on: 1-Nov-2016

Coming Events:



A day full of activities, games and fun.







Lakemba Blacktown Mascot
Minto Money raised so far





Lakemba Blacktown Mascot
Minto Money raised so far



Blacktown Lakemba Mascot
Minto Money raised so far







Blacktown Lakemba Mascot
Minto Money raised so far