আমার মা কামরুল মান্নান আকাশ
ডিসেম্বর শেষ হয়ে এলো। এই মাস এলেই মনে পড়ে আমার মায়ের কথা, দেশের কথা। সব সময়ই মনে পড়ে, তখন আরো বেশি করে মনে পড়ে। এই মাসে আমি হারিয়েছি আমার মাকে, পেয়েছি স্বাধীন দেশ। মাকে হারানোর দশ বছর পূরণ হল গত ১১ই ডিসেম্বরে। আর ১৬ই ডিসেম্বর জন্ম হয় স্বাধীন বাংলাদেশের। তাই এই মাসে আমার দুই মাকে নিয়ে অনেক ভাবনা, অনেক স্মৃতি এসে ভিড় করে মনে। মনে হয় তাদের কথা লিখি কিন্তু লেখা আর হয়ে উঠেনা। দেশ ছেড়ে এসে আজ দুই মাকেই হারিয়ে ফেলেছি। সেদিন গাড়িতে যেতে যেতে শুনছিলাম ডি এলো রায়ের গাওয়া “কেন তুই ঘরের ছেলে পড়ে আছিস, পরের দেশে, পরবাসে” ভাবছিলাম আর কি ফেরা হবে ঘরে, আর কি ফেরা হবে মায়ের কাছে! যতদূরে যাই, যেখানেই যাই বুকের মাঝে বয়ে বেড়াই মাকে। মুহূর্তের জন্যও ভুলিনা, ভুলতে চাইনা।
মায়ের কথা লিখতে যেয়ে, মায়ের কথা ভাবতে গিয়ে কলম থেমে যায়, চোখ ভিজে উঠে পানিতে। লিখতে শুরু করে বুঝতে পারছি মাকে নিয়ে লেখা কত কঠিন। তাই মাকে নিয়ে আজো কিছু লিখতে পারিনি। কি লিখব, কতটুকু লিখব, কেমন করে লিখলে আঁকা যাবে আমার মায়ের ছবি তা আমার জানা নেই! এ এক অসম্ভব চেষ্টা।
মায়ের কথা ভাবলে শুধু শৈশবের ছবি ভেসে উঠে। ছোট বেলায় আমি খুব অসুখে ভুগতাম তাই মা আমাকে সবসময় একটু বেশীই আগলে রাখতেন। আর আমি সারাক্ষণই মার পিছনে ঘুর ঘুর করতাম। আম্মা বলতেন এবার একটু খেল যেয়ে আমার অনেক কাজ জমে আছে। একটু পরেই আবার ফিরে আসতাম পানি খাওয়ার ছলে। আমার এই মা-নেওটার ব্যাপারটা সবাই জানত তাই বলত, কি, মাকে দেখতে ফিরে এলি? আমি বলতাম না না পানি খেতে এসেছি। মা আদর মাখা চোখে তাকিয়ে হেসে বলত ওর গলা শুকিয়ে যায় তাই। মাকে ছেড়ে মোটেই থাকতে পারতাম না, কোনদিন কারো বাসায় যেয়ে রাতে থাকিনি। একবার চেষ্টা করেছিলাম পরে রাতে এমন কান্না জুড়ে দিয়েছিলাম যে আমাকে মার কাছে পৌঁছে দিতে হয়েছিল। স্কুলে যেয়ে শুধু কাঁদতাম, তাই অনেকদিন আমাকে স্কুলে না পাঠিয়ে আম্মা বাসায়ই পড়িয়েছিলেন। অনেক বড় হয়েও মা আমাকে মুখে তুলে খাইয়ে দিতেন, মাছের কাঁটা বেছে দিতেন, না হলে আমি খেতাম না। ছোটবেলায় আম্মা এসে ঘুম পাড়িয়ে দিতেন। যদি কখনো সংসারের কাজে আসতে দেড়ি হত আমি চোখে ঘুম নিয়ে কাঁদতাম। আম্মা এসে তাঁর একটা শাড়ি দিয়ে যেতেন, আমি সেটায় মুখ গুঁজে মায়ের গন্ধ নিতে নিতে ঘুমিয়ে পড়তাম। আরো বড় হয়ে বিকেল বেলা সবাই যখন বাইরে চলে যেত খেলতে আমি যেতাম না আম্মাকে একা ফেলে। আম্মা একা একা থাকবে ভাবতেই খারাপ লাগত। বারান্দায় দাঁড়িয়ে আম্মার সাথে গল্প করতাম। কত কথাই না বলতেন। আম্মার ছোটবেলার গল্প, আমাদের ছোটবেলার গল্প, আত্মীয়-স্বজনদের কথা। সবচেয়ে বেশি বলতেন আব্বার কথা, কারণ আব্বা তখন ছিলেন কানাডাতে। সে সময় তো ফোন ছিলনা একেকটা চিঠি আসতে ২০ থেকে ৩০ দিন লেগে যেত। আম্মা অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকতেন আর আমাদের পাঠাতেন পোষ্ট বক্স চেক করতে। চিঠি পেয়ে আম্মার মুখ খুশিতে ঝলমল করত। আব্বা আমাদের সবাইকে আলাদা করে লিখতেন, কখনো ছবি, ভিউ কার্ড বা স্ট্যাম্প পাঠাতেন। পড়াশুনা, রিসার্চ এবং চাকরি নিয়ে প্রায় সাত বছর আব্বা বিদেশে ছিলেন। উনি আমাদের কানাডায় নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন এবং সব কাগজপত্রও তৈরি ছিল। কিন্তু আম্মা বিদেশে যেতে রাজী ছিলেন না।
এই যে এত মা নেওটা আমি, সেও বদলে যাই ১৯৭০-৭১ সালে। সেই সময় আব্বা দেশে ছিলেন না। আমরা ছয় ভাই বোন। আম্মাকে একাই ঘরে বাইরে সব সামলাতে হত। সংসারের কাজ, আমাদের পড়াশোনা, স্কুলসহ সব কিছুই। আমি তখন ক্লাস সিক্সে আর বড় ভাই ফারুক’দা এইটে, অন্য ভাই বোনরা খুব ছোট। প্রায়ই আমি ও ফারুক’দা মিছিলে-মিটিং এ চলে যেতাম। বাসায় ফিরে আম্মাকে বলতাম মিছিলে কি হয়েছে, মিটিঙে কি বলেছে। আম্মা শঙ্কিত হতেন কিন্তু না করতেন না, শুধু বলতেন সাবধানে থাকিস। একাত্তরের শুরুর দিকে আন্দোলন তখন তুঙ্গে আমার খুব জ্বর হল আম্মা নিয়ে গেলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের এক ডাক্তারের কাছে। কথায় কথায় সেই ডাক্তার ব্যাঙ্গ করে বললেন বাঙ্গালী করবে দেশ স্বাধীন – চটি জুতো তার আবার ফিতে! আম্মা বললেন সবাই যে ভাবে নিজের জীবন তুচ্ছ করে আন্দোলন করছে কিছু একটা তো হবেই। বাইরে এসে একটু রেগেই আমাকে বললেন দেখলি কি সব বলে এরা। সেই ডাক্তারকে পরে পাকিস্তানি আর্মিরা মেরে ফেলে এবং তিন হন শহিদ বুদ্ধিজীবী। আমার মা আশাবাদী ছিলেন দেশ স্বাধীন হবে, ডাক্তার সাহেব ছিলেন না। এখন ভাবি সেই সময় সহজ সরল মায়েরা কেমন করে তাদের সন্তানদের সহজেই স্বাধীনতার মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ করতেন।
আমারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঈসাখান রোডের ২৮ নম্বর বিল্ডিঙের তিন তলার যে বাসায় থাকতাম তার একদিকে ছিল জগন্নাথ হল আরেক দিকে শামসুন্নাহার হল। ২৫শে মার্চের রাতে জগন্নাথ হল এবং ইকবাল হলেই সবচেয়ে বেশি ছাত্র হত্যা করে পাক (নাপাক!) আর্মি। সেই রাতে প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। প্রথমে বুঝতে পারিনি কি হচ্ছে! আম্মা বললেন পাকিস্তানিরা আক্রমণ করেছে ইউনিভার্সিটিতে। জানালার পর্দা সরিয়ে দেখি জগন্নাথ হলে আগুন জ্বলছে আর আর্মিরা গুলি করছে ট্যাঙ্ক, কামান দিয়ে। হলের মাঠে সবাইকে জড়ো করে গুলি করে মারছে। শামসুন্নাহার হল থেকে ভেসে আসছে মেয়েদের আর্ত চিৎকার আর কান্নার আওয়াজ। সেদিকের জানালা দিয়ে দেখি মেয়েদেরকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে আর চ্যাংদোলা করে ছুঁড়ে ফেলছে আর্মির লরিতে। এক সময় আম্মা বললেন আমাদের বারান্দায় যে বাংলাদেশের পতাকা এবং শোকের কালো পতাকা উড়ছে সেটা না নামালে সকাল হলে বিল্ডিং ঘিরে থাকা সৈন্যরা বাসায় গুলি ছুড়বে। বাইরে তাকিয়ে দেখি সৈন্যরা আমাদের বাসার দিকে মেশিন গান ফিট করে বসে আছে। এই প্রচণ্ড গোলাগুলির মধ্যে আম্মা যেয়ে পতাকা নামিয়ে আনলেন, আমাদের যেতে দিলেন না।
ভোর রাতের দিকে দরজায় কে যেন কড়া নাড়ছে, জিজ্ঞেস করতে জানাল ওরা জগন্নাথ হল থেকে পালিয়ে এসেছে। আম্মা দরজা খুলে দিলেন দেখি লুঙ্গি পরা ৪/৫ জন ছাত্র, গুলি লেগে সারা গায়ে রক্ত। ওরা পানি চাইল আম্মা সবাইকে পানি খাওয়ালেন। আমার এক চাচা ছিলেন বাসায় আম্মা তাকে বললেন ওদের ছাদে নিয়ে চাদর পেতে দিতে। শাড়ি ছিঁড়ে এবং ডেটল দিয়ে বললেন ওদের আহত জায়গা গুলোতে ব্যান্ডেজ বেধে দিতে। আমি আর ফারুক’দাও উনাকে সাহায্য করতে ছাদের চিলে কোঠায় গেলাম। এরপর আম্মা ওদের খাবারের ব্যবস্থা করলেন। ২৭ তারিখে কার্ফু উঠলে ওরা চলে যায়। আমরাও পুরান ঢাকার সিদ্দিক বাজারে আমার নানার বাড়িতে চলে যাই। যাওয়ার সময় দেখি জগন্নাথ হলের যে সবুজ মাঠে আমরা খেলতাম তা খয়েরী মাটিতে ঢাকা ঘাস আর নেই। আম্মা বললেন মাটি খুঁড়ে সব লাশ চাপা দিয়েছে ওরা তাই এমন। এরপর সম্ভবত ৩১শে মার্চ আমরা বাসে করে গ্রামের বাড়ি নরসিংদী যাচ্ছি। যাত্রাবাড়ী পার হওয়ার পর আর্মিরা বাস থামাল এবং চেক করা শুরু করল। সবাইর কাছে আই ডি কার্ড চাইছে। আম্মা ছোট ভাইবোনদের নিয়ে সামনে বসেছিলেন। আমি আর ফারুক’দা কয়েক সিট পরে বসেছিলাম। সৈন্যরা আমাদের সামনে আসা মাত্র আমারা স্কুলের আই ডি কার্ড বের করে দিয়ে বললাম “স্টুডেন্ট”। ওরা বলে উঠল “হাম লোগ তো ইয়েই চাহতা টিচার আওর স্টুডেন্ট। বাহার আ যাও আওর লাইনমে খাড়া হো যাও” বলে সামনে চলে যায়। আমরা দু ভাই উঠে দাঁড়িয়ে দরজার দিকে যাচ্ছি অমনি আম্মা খপ করে আমাদের হাত ধরে বলল একদম নামবিনা বাস থেকে। আমরা আবার বসে পড়লাম। জানালা দিয়ে দেখি অনেক লোককে লাইন করে দাঁড় করিয়ে রেখেছে। বাস ছেড়ে একটু সামনে যাওয়ার পরই শুনি ব্রাশ ফায়ারের আওয়াজ। আম্মা দোয়া পড়তে পড়তে বললেন সবাইকে মেরে ফেলল। সেদিন যদি আম্মা আমাদের সঠিক সময়ে না আটকাতেন তাহলে হয়ত আমাদের পরিণতিও লাইনে দাঁড়ানো মানুষদের মতই হত।
এরপর মুক্তি যুদ্ধের নয় মাসের কত কথা কত স্মৃতি, ঢাকার, গ্রামের, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের। সব লিখতে গেল অনেক বড় লেখা হয়ে যাবে। চারিদিকে আর্মির এত অত্যাচার, আগুন, হত্যাকাণ্ড দেখে অস্থির হয়ে যেতাম, প্রতিশোধের আগুনে জ্বলতাম। আমার চাচা আবদুল আওয়াল ছিলেন মুক্তি যোদ্ধাদের সমন্বয়কারী তাই মুক্তি যোদ্ধারা প্রথমেই আমাদের বাড়িতে আসত। ওদের অস্ত্র নিয়ে নাড়াচাড়া করতাম, গুলি ছুঁড়তাম। মনে হত শত্রুর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ি। আম্মাকে বলতাম আমি যুদ্ধে যেতে চাই আম্মা বলতেন তুমি যুদ্ধের জন্য খুব ছোট, আরও বড় হও তখন যেও। এখন ওদেরকে এখানে থেকেই সাহায্য কর। আমাদের বাসায় নরসিংদী এবং গ্রামের বাড়ী থেকে আসা লোকজনের আনাগোনা লেগেই থাকত। কেউ আসত ভর্তি হতে, চাকরি খুঁজতে, থাকত দিনের পর দিন। আব্বা তাদের চাকরির ব্যবস্থা করে দিতেন। কেউ আসত শুধু ঢাকা শহর দেখতে, সিনেমা দেখতে, রমনা পার্ক দেখতে আরও কত আবদার নিয়ে। আম্মা হাসিমুখে সবার থাকা খাওয়ার ভার নিতেন এবং যাওয়ার সময় পথখরচও দিয়ে দিতেন। আম্মার কাছে কাকে কাকে আর্থিক সাহায্য করতে হবে তাঁর লিস্ট থাকত এবং তাদেরকে সাধ্যমত সাহায্য করতেন। বেশির ভাগ মানুষই তা মনে রেখেছে এবং আজও আমার মায়ের আদর, ভালবাসা এবং সাহায্যের কথা বলে। আর কিছু মানুষ অর্থ বিত্তের মালিক হয়ে তা ভুলে গেছে, কিন্তু আমার মা তা নিয়ে কোনদিন অনুযোগ করেন নি। আমাদেরকে বলতেন যখনই পারবে মানুষকে সাহায্য করবে কিন্তু কিছু পাওয়ার আশা করবে না।
মায়ের কথা লিখতে যেয়ে কত কথা কত স্মৃতি এসে মনে ভিড় করছে কোনটা ছেড়ে কোনটা লিখি। বার বার চোখের সামনে ভেসে উঠছে ছোট বেলায় দেখা মায়ের মুখ। বুকের মাঝে গুমরে উঠছে কান্নার ঢেউ।
আমার মা খুব বেশী সাজগোজ করতেন না। আম্মা পান খেতেন, সেই পানের রঙে রাঙানো টুকটুকে লাল ঠোঁট আর সামান্য সাজগোজেই মনে হত অপরূপা। আম্মা একদিন আমাকে স্কুলে দিতে এসেছেন আমার এক সহপাঠী বলে উঠল তোর মাকে না নূতন বউয়ের মত সুন্দর লাগছে। সাথে সাথে আমি তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ি এই জন্য যে মা কেন বউ হবে, মা তো মা-ই! এখন বুঝি ও সেদিন প্রশংসাই করেছিল। আসলে সব মায়েরাই তাদের সন্তানদের কাছে অপূর্ব সুন্দর! পৃথিবীতে মায়ের চেয়ে সুন্দর যে আর কিছু নেই। আম্মা খুব বই পড়তেন তাই আমাদের বাসায় প্রচুর বই ছিল। পরে খুব বেশী সময় পেতেন না তবে ম্যাগাজিন, পত্রিকা পড়তেন এবং সব বিষয়েই খোঁজ খবর রাখতেন। আর শুনতেন গান। রাতের খাবারের পর আব্বা যখন পড়াশুনা এবং লেখা লেখি করতেন আম্মা তাঁর প্রিয় শিল্পীদের গান শুনতেন। আমাদের বাসায় প্রায় ৪০০র মত ক্যাসেট এবং লংপ্লে রেকর্ড ছিল।
আব্বা যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন তখন উপাচার্য ভবনে মাঝে মাঝে গানের আসর বসত। দেশের এবং ইন্ডিয়া থেকে আগত নামী শিল্পীরা সেখানে গাইতেন। ১৯৮৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভারতের প্রখ্যাত গায়ক হেমন্ত মুখোপাধ্যায় বাংলাদেশে আসলেন গান গাইতে। আম্মা আব্বাকে বললেন হেমন্তকে আমাদের বাসায় আমন্ত্রণ জানাতে। আব্বা বললেন উনার সব প্রোগ্রাম তো আগে থেকেই ঠিক করা আছে সময় কি করতে পারবেন। আম্মা আবদার ধরলেন বললেন উনাকে বল আমার স্ত্রী আপনার ভক্ত এবং আপনার গান শুনতে চায়। আব্বা ফোন করলেন এবং হেমন্ত মুখোপাধ্যায় সাথে সাথে আমন্ত্রণ গ্রহণ করলেন। পরে আব্বা ফোনে কি কথা হয়েছে আমাদের জানালেন। হেমন্ত আব্বাকে বলেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অনুরোধ তো আমি ফিরিয়ে দিতে পারিনা তার চেয়ে বড় কথা সেখানে আছে আমার এক ভক্ত, আমাকে তো আসতেই হবে। ঢাকা ক্লাবের অনুষ্ঠান শেষ করে তিনি আমাদের বাসায় এসেছিলেন সাথে তাঁর মেয়ে রানু আর তার বরকে নিয়ে। অনেক গান গেয়েছিলেন। বাবা মেয়ে মিলে গেয়েছিলেন সেই বিখ্যাত “আয় খুকু আয়” গানটিও। রাতের খাবার খেতে খেতে বলেছিলেন এখানে এসে নিজেকে সম্মানিত মনে করছি। এত বড় শিল্পী অথচ কী তাঁর বিনয়! দেশে ফিরে যাওয়ার কিছুদিন পরই তাঁর মৃত্যু হয়। আমার অন্য বন্ধুদের সাথে মিনি যখন প্রথম আমাদের বাসায় আসে তখন ওর গান শুনে আম্মা ওকে পছন্দ করেছিলেন। মাঝে মাঝে গান গাওয়া মেয়েটির কথা জিজ্ঞাস করতেন। এরপর তো মিনি আমাদের বাসারই একজন হয়ে যায়।
পরের অংশ
|