ক্যানবেরায় রবীন্দ্রনাথের আবক্ষ মূর্তি স্থাপিত অজয় কর
অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরায় গত শনিবার, ৭ই মে ২০১৬ এসিটি চিফ মিনিস্টারের পক্ষে এসিটি মাল্টি-কালচারাল এফেয়ার্স মিনিস্টার ইভেট বেরি বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি আবক্ষ-মূর্তি উন্মোচন করেন। এ সময়ে উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে মিনিস্টার বেরি বলেন, ‘একজন বিখ্যাত লেখক হিসাবে সম্মান জানাতেই শুধু রবীন্দ্রনাথের এই আবক্ষ মূর্তি নয় বরং এই আবক্ষ মূর্তি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় সহনশীলতা, ঐক্য, সৃষ্টি ও শান্তির প্রয়োজনীয়তার কথা।‘
ক্যানবেরার থিও নোটারাস মাল্টিকালচারাল সেন্টারে (১৮০ লন্ডন সার্কিট, ক্যানবেরা ) মূর্তিটি স্থাপন করা হয়। ফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তার সাথে উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার লেবার ও লিবারেল পার্টির নেতৃবৃন্দ, অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত; বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত; শ্রীলংকার রাষ্ট্রদূত; পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত এবং অসংখ্য রবীন্দ্র ভক্তরা।
এ সময় কবিগুরুকে ফুলের মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ভারতীয় হেরিটেজের মানুষের পক্ষে হিজ এক্সিলেন্সি নবদ্বীপ সুরী; বাংলাদেশী হেরিটেজের মানুষের পক্ষে হিজ এক্সিলেন্সি কাজী ইমতিয়াজ হোসেইন; শ্রীলংকান হেরিটেজের মানুষের পক্ষে হিজ এক্সিলেন্সি সমাসুন্দারাম স্কান্দাকুমার; পাকিস্তানী হেরিটেজের মানুষের পক্ষে হার এক্সিলেন্সি নেলা চৌহান; আর সমগ্র ক্যানবেরানদের পক্ষে কবিগুরুকে শ্রদ্ধা জানান সম্মানিত সংসদ সদস্য মিস গেই ব্রডম্যান আর ড: এন্ড্রু লি। ভারতের, বাংলাদেশের আর অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে মূর্তি উন্মোচন অনুষ্ঠানের আলোচনা শুরু হয়।
এসিটি মাল্টি-কালচারাল সেন্টারে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তি স্থাপন করায় হিজ এক্সিলেন্সি নবদ্বীপ সুরি এসিটি গভর্নমেন্টকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘মাল্টি-কালচারাল ক্যানবেরায় কবিগুরুর মূর্তি বাঙ্গালী ও বাঙ্গালী সংস্কৃতির স্বাক্ষর বহন করবে।‘
ক্যানবেরায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তি স্থাপন হওয়ায় এসিটি গভর্নমেন্ট ও এই উদ্যোগের সংগে জড়িত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে হিজ এক্সিলেন্সি কাজী ইমতিয়াজ হোসেইন বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ বাঙালীর অনুপ্রেরণা। ১৬০ মিলিয়ন বাঙালির মনে রবীন্দ্রনাথ। বাংলাদেশে একজন মানুষকেও পাওয়া যাবে না যে রবীন্দ্রনাথের গান শোনে না কিংবা তার লেখা পড়ে না। বাংলাদেশীদের হৃদয়ে রবীন্দ্রনাথ।‘
পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত হার এক্সিলেন্সি নেলা চৌহান বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ এক বিশুদ্ধ আত্মার নাম। রবীন্দ্রনাথের আবক্ষ মূর্তি আমাদেরকে বিশুদ্ধ আত্মাকে মনে করিয়ে দেয় – এই আত্মা আমাদের সকলের মধ্যে আছে।‘ রবীন্দ্রনাথের আবক্ষ মূর্তি স্থাপনের জন্যে তিনি এসিটি গভর্নমেন্টকে ধন্যবাদ জানান।
বাংলা ভাষাকে আর বাঙালি সংস্কৃতিকে সারা বিশ্বে মর্যাদার আসনে বসাতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান সর্ব স্বীকৃত। বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সঙ্গীতের স্রষ্টা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সাহিত্য, সংস্কৃতি ও মানব কল্যাণে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদানের স্বীকৃতিতে আঙ্কারা, বুখারেস্ট, বার্লিন, বুদাপেস্ট, ডাব্লিন, ফিজি, মেক্সিকো , মাউরিতাস, হাভানা, ভ্যানকুইভার, টরেন্টো, নিউ ইয়র্ক, লন্ডন , টোকিও , প্রাগ, প্যারিস- সহ পৃথিবীর অনেক শহরে ইতিমধ্যেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বিশ্বকবির আবক্ষ-মূর্তি।
অনুষ্ঠানে ক্যানবেরা ও সিডনির শিল্পীরা রবীন্দ্রসঙ্গীত আর নৃত্য পরিবেশন করেন। রাত সাড়ে আটটার দিকে সকলকে নৈশ ভোজের আমন্ত্রণ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
অজয় কর, ক্যানবেরা
|